কিছুদিন পরেই শুরু হবে পবিত্র রমজান মাস। মুসলিমদের কাছে এই মাসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসময় প্রত্যেক মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জীবন-যাপনের অভ্যাসে একটি বড় পরিবর্তন আসে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সারাদিন অনাহারে থেকে সন্ধ্যায় তারা ইফতার করে।
এসময় বাড়ির গৃহিণীরা ইফতারিতে নানা রকম আয়োজনের পাশাপাশি সেহরিতে ঠিক কী রান্না করলে মুখে রুচবে তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন। তাইতো রোজার মাসটা ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি রান্নাবান্নায়ও দিতে হয় একটু বাড়তি সময়। আবার সারাদিন রোজা রেখে রোজ রোজ বাজার করাটাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই রোজা শুরু হওয়ার আগেই কিছু কিছু কাজ সেরে রাখুন। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক রোজার আগে যে কাজগুলো গুছিয়ে রাখবেন সে সম্পর্কে-
>> রোজা শুরুর আগেই পরিষ্কারের কাজ শেষ করে ফেলা ভালো। চুলা, মাইক্রোওয়েভ (ভেতর ও বাইরে), কেবিনেট, ফ্রিজ, জানালা, রান্নাঘরের কাউন্টার, স্টোভের ওপর ও মেঝে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এসব কাজ সেরে ফেলার পর দেখা যাবে রোজার গোটা মাসটি নিশ্চিন্তে গুছিয়ে কাজ করতে পারছেন।
>> রোজার আগে চাপ কমাতে রান্নাঘরের দিকটা গুছিয়ে নিতে পারেন। অর্থাৎ পুরো মাসের বাজারটা করে রাখলে চিন্তা অনেকটাই কমে যাবে।
>> রোজায় ইফতার ও সেহরির মেনু তৈরি করা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। তাই বাজার করার সুবিধার্থে আগেভাগেই তা তৈরি করে ফেলুন। একটু সময় নিয়ে সারা মাসের ইফতারে কী কী থাকবে, কী কী মজুদ রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো কী পরিমাণে কেনাকাটা করতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
>> তাজা শাক-সবজি বেশি করে কিনতে যাবেন না যেন। ঠিক দুইদিন ব্যবহার করা যায় এমন হিসাব করে শাক-সবজি কিনুন। কারণ রোজায় টাটকা সবজি খেতেই বেশি ভালো লাগবে। তাই শাক-সবজি কিনুন ব্যবহারের দুদিন আগে। মাছ-মাংস সাতদিন বা দশদিনের জন্য একসঙ্গে কিনে রাখুন। যাতে করে তার আকার, বর্ণ ও স্বাদ ঠিক থাকে।
>> শুকনো উপকরণ যেমন- ছোলা, ডাল, ময়দা, বাদাম, গুঁড়া দুধ এগুলো দুইভাগে বা পুরো মাসের জন্য একবারে কিনে মজুদ করতে পারেন। অন্যান্য যেমন- কেচাপ, শরবত তৈরির উপকরণ, পনির এসবও প্রয়োজন হিসেবে তালিকা করুন। রোজার শুরুর দিকে শুকনো খাদ্যদ্রব্য যেমন- শস্য, মসলা ও টিনজাত খাবার কিনে রাখুন।
>> আপনি যেখান থেকে কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেখানেই কেনাকাটর কাজ সারুন। তবে ভালো হয় নিকটস্থ কোনো সুপার শপ থেকে কিনলে। কারণ সেখানে আপনি চাহিদামতো সবকিছুই পেয়ে যাবেন। সেজন্য আপনাকে এদিক-ওদিক ঘুরতে হবে না। আবার কোনো কোনো সুপার শপে রমজান উপলক্ষে বিশেষ ছাড় থাকে। তাই সেখান থেকে কেনাকাটা করলে কিছুটা সাশ্রয়ও হবে।
>> ঘরে এমন কিছু খাবার মজুদ রাখা প্রয়োজন, যাতে শেষ মুহূর্তেও চট করে তৈরি করে নেয়া যায়। রুটি, ফল, দুধ, ডিম, ওটমিল, মিষ্টি আলু, মাছ (কেটে ধুয়ে রাখা), বার্লি, সিরিয়াল, সবজি (কেটে বরফ করে রাখা), মটরশুঁটি (সিদ্ধ) এসব রাখা যেতে পারে।
>> খাবার সহজে প্রস্তুতকরণ ও অতিরিক্ত খাবার সংরক্ষণের জন্য ফয়েল পেপার, পেপার টাওয়েল, প্লাস্টিক ব্যাগ, কয়েক আকারের ফুড কন্টেইনার (কাচ ও ওভেন প্রুভ, যাতে সহজেই গরম করা যায়) রান্নাঘরে রাখতে হবে।
>> রমজানে রান্নাঘরে কাজ বেশি থাকে বিধায় সহজে সেসব করার উপায় বের করে ফেললে সময় বাঁচানো যাবে। যেমন বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ কুচি করে ফ্রিজে রেখে দিন, বাটা মসলাগুলো একবারে বেশি করে তৈরি করে ডিপফ্রিজে রাখুন, এতে কয়েক দিন চলে যাবে।
>> ইফতারের আগে ফল কেটে লবণপানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে তা বাদামি রঙ ধারণ করবে না। এ রকম কাজ সহজ করে নেয়ার অনেক উপায় রয়েছে। রান্নার বই ও ইন্টারনেট থেকে সহজতম রান্নার উপায়গুলো রপ্ত করলে কম সময়ে অনেক কাজ শেষ করে ফেলা যাবে। ফলে কম সময়ে দ্রুত কাজ করতে পারবেন আপনি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন