লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে লাকসামের পথ প্রান্তর

লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে লাকসামের পথ প্রান্তর

গোটা বিশ্ব করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এখনো থম থমে, থেমে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। তবে করোনার এই অপ্রত্যাশিত আক্রমণে মানুষ যখন অসহায়,
ভেঙে পড়া অর্থনৈতিক অনটনে যখন দিন কে দিন কঠিন হয়ে পড়েছে মানুষের চলমান জীবন।তখনই এই থমকে যাওয়া যাত্রায় বাংলার প্রকৃতি হয়ে উঠেছে সবুজ শ্যামল। সেই সবুজের বুকে সূর্যের রক্তিম আবাহ নিয়ে গাছে-গাছে ফুটেছে লাল কৃষ্ণচুড়া।

ফুলগুলো কোন লকডাউন মানেনি। দক্ষিণ কুমিল্লা জুড়ে কৃষ্ণচুড়া, ফুল ফুটেছে। চলার পথে হঠাৎ থমকে দাড়াতে হয় এ দৃশ্য দেখে।আর তখন মনে পড়ে গানের সেই লাইন দুটো-
"কৃষ্ণচূড়া লাল হয়েছে ফুলে ফুলে তুমি আসবে বলে"।

অথচ পথের ধারে পথিক নেই যে একপলক দেখবে এই সৌন্দর্য্য। তাইতো একা একা ফুল, ফুটে ঝড়ে। সংকটকালের গভীরভাবে ভালোবাসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে এই ফুলগুলো। আমরা তার কতটা বুঝি?

করোনা আতংকে অনুভূতির দরজায় যখন শূণ্যতার করাঘাত, জানালা জুড়ে তখন প্রকৃতির রঙিন ক্যানভাস বলছে ভিন্ন সুরে অন্যরকম এক পূর্ণতার গল্প।

এই যেমন সবুজ প্রেমে বাতাসের নাগরদোলায় দুলছে কৃষ্ণচূড়ার গাঢ় লাল; যে আগুন রঙে মিশে আছে আবেগ প্রেম আন্তরিকতা আর ভালোবাসার নানা কথা। করোনা ভীতিতে তাই নগর যখন খুব কাতর, তখন পথ জুড়ে কৃষ্ণচূড়ার প্রতিটি পাঁপড়ি যেনো বলছে সে কথাই।

বৈশাখের আকাশে গনগনে সূর্য। কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত বাতাস। প্রকৃতি যখন প্রখর রৌদ্রে পুড়ছে কৃষ্ণচূড়া ফুল আর এরি মাঝে জানান দেয় তার সৌন্দর্যের বার্তা। গ্রীষ্মের এই নিস্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে মেলে ধরে আপন মহিমায়। যেন লাল রঙে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি, যে কারো চোখে এনে দেয় শিল্পের দ্যোতনা।

এই সময়টায় সারা দেশের মতোই দক্ষিণ কুমিল্লার বৃহত্তর  লাকসামে চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রৈদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি; সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে।জ্যৈষ্ঠের গ্রীষ্মের ঘামঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে। তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথচারীরা পুলকিত নয়নে, অবাক বিষ্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য্য।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে যখন এই ফুল ফুটে তখন এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরাও থমকে তাকাতে বাধ্য হন।

প্রকৃতির এই অতুলনীয় সুন্দর্য কুমিল্লা জেলার সবকয়টি  উপজেলায়, শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে পথে প্রান্তে দেখামিলবে কৃষ্ণচুূড়ার, তবে অন্যান্য  উপজেলার মধ্যে মন মুগ্ধকর দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছে লাকসাম  উপজেলা পথে প্রান্ত সহ বিভিন্ন প্রতিষ্টানের প্রাঙ্গন আর খেলার মাঠে।দেখলে মনে হবে যেন প্রকৃতি সেজেছে নিয়ন বাতির আলোয়।

প্রতি বছর এই মৌসুমে প্রেমিক প্রেমিকা বা নব দম্পতিদের ভিড় জমে কুমিল্লা জোরে   ছোট্ট বড় পথের দ্বারে, ভালোবাসার মানুষের খোঁপায় কৃষ্ণচুড়া গেথে দিয়ে অমর ভালোবাসার সাক্ষী হয় প্রকৃতি,কিন্তুু গ্রীষ্ম ফুড়িয়ে গেলেও এবার ফুড়ায় নি করোনার প্রকোপ।কিছু দিন বাদে বুক ভরা অভিমান নিয়ে ঝরে পড়বে লাল টুক টুকে এই কৃষ্ণচুড়া প্রেমিকার খোঁপায় ঠাই হয় নি এবার আর।তবে আগামী মৌসুমে সেই অভিমান ঘুচে যাবে এমন টাই আশা।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password