নওগাঁর সাপাহারে হাতুড়ে কবিরাজের চিকিৎসায় এক শিশুর বেহাল অবস্থা

নওগাঁর সাপাহারে হাতুড়ে কবিরাজের চিকিৎসায় এক শিশুর বেহাল অবস্থা

নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় হাতুড়ে কবিরাজের চিকিৎসায় আল আমিন (৭) নামের এক শিশুর ডান হাতের বেহাল অবস্থা হয়েছে।

বাচ্চাটির উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দিয়েছেন সাপাহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর চিকিৎসকরা।

ভুক্তভোগী বাচ্চার অবিভাক জানান, গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) উপজেলার হাঁপানিয়া বিরামপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আল আমিন খেলা করার জন্য বাড়ীর পাশে ছোট একটি আমগাছে ওঠে। পরে হঠাৎ গাছ থেকে পড়ে তার ডান হাতের বাহুতে আঘাত লাগে।

এসময় তাদের আত্মীয় উপজেলার আন্ধাদিঘী গ্রামের হাবিবুরে ছেলে আব্দুল আলীমের পরামর্শে ধামইরহাট উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের জৈনক হাতুড়ে কবিরাজ জমশেদের নিকট নিয়ে যান। ওই কবিরাজ জমশেদ বাচ্চার হাতে বাঁশের বাতি দিয়ে হাত বেঁধে দেয়।

পরবর্তী সময়ে হাতের বাহুতে ফোস্কা পড়ে পচনের আকার ধারন করলে বাচ্চার বাবা মা আবার ওই কবিরাজের সাথে যোগযোগ করলে ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেয়। এমতাবস্থায় রবিবারে (১লা আগষ্ট) দুপুরে ওই বাচ্চাকে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তার অবিভাকরা।

এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হাতের অবস্থা দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এবিষয়ে অভিযুক্ত কবিরাজ জমশেদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে সে বিষয়টি স্বীকার করে এবং বাচ্চার হাত ভালো হয়ে যাবে এমনটা দাবী করে।

এছাড়াও অনেক রোগী তার কাছে ভালো হয়েছে বলেও জানায়। কবিরাজি বিষয়ে লাইসেন্স বা কোন প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সে বিষয়টি এড়িয়ে যায়।

এবিষয়ে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও হাড়জোড়, বাতব্যাথা বিশেষজ্ঞ সার্জন মোর্শেদ মঞ্জুর কবির লিটন জানান, বাচ্চার হাতের অবস্থা খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে। এমতাবস্থায় আমরা বাচ্চাটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দিচ্ছি।

বাচ্চার হাত রাখবে বা কেটে ফেলবে সে সিদ্ধান্ত মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ নিবেন। এছাড়াও ভুয়া কবিরাজকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান তিনি।

সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প কর্মকর্তা ডাঃ মুহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, বর্তমান আধুনিকতার যুগে মানুষের কাছে এমনটা আশা করা যায়না।

বাচ্চার অবিভাবকগণ যদি তাৎক্ষণিক কোন বিশেষজ্ঞকে দেখাতেন তাহলে খুব সহজেই এটি রিকভারী হওয়া সম্ভব ছিলো। কিন্তু বর্তমানে বাচ্চার হাতের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা বাচ্চাটিকে উন্নত চিকি’ৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password