যশোরে রেকর্ড সংখ্যক নমুনা পরীক্ষায় তিনশত পাঁচ জনের দেহে করোনা শনাক্ত

যশোরে রেকর্ড সংখ্যক নমুনা পরীক্ষায় তিনশত পাঁচ জনের দেহে করোনা শনাক্ত
MostPlay

যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকার ছঁয় শত পঁয়তাল্লিশ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩০৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যশোরে আজকে রেকর্ড সংখ্যক নমুনা পরীক্ষায় রেকর্ড সংখ্যক তিন শতাধিক ব্যক্তির দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকার ৬৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৫ জনের দেহে এই করোনা ভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্তের হার রেকর্ড করা হয়েছে ৪৭ শতাংশ।

একই সময়ে যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুজন এবং উপসর্গ নিয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। এরা সবাই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন সেখানেই মৃত্যু হয়। যশোরের জেনারেল হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যশোর জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং ৩০৫ জনের দেহে এই করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়, একদিনের হিসেবে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যক বলেন।

যশোরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৫১ জন হাসপাতালে এডমিট হয়েছেন। এবং এই হাসপাতালের করোনা লাল ও হলুদ জোনে ৯৯ শয্যার বিপরীতে ১২২ জন ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ৮০ শয্যার করোনা ইউনিটে (লাল) ৮৭ জন এবং ১৯ শয্যার বিপরীতে আইসোলেশন (হলুদ) ওয়ার্ডে ৩৫ জন ভর্তি আছেন। এবং বর্তমানে হাসপাতালে কোনো শয্যা খালি নেই বলে জানানো হয়েছে। তিন শয্যার আইসিইউ ইউনিটও রোগীতে পূর্ণ হয় গেছে বলে জানানো হয়েছে।

এইদিকে, যশোর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ বেড়েই চলছে। এবং শয্যার চেয়ে অতিরিক্ত বেশি রোগী ভর্তি করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় রোগীর চাপ সামাল দিতে আরও ৫০ শয্যার দুটি করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।এইদিকে, ২৫ শয্যার একটি ওয়ার্ডের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে এখানে। এবং সেখানে সংকটাপন্ন রোগীদের স্থানান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক আরও জানায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাজেদা ফাউন্ডেশনের অর্থায়ন ও অবকাঠামোগত সুবিধা নিয়ে এ হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রমের পরিধি অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে ইতিমধ্যে।ঐ প্রতিষ্ঠানটি করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে। এইদিকে, যশোরের বিভিন্ন এলাকাতে দিনে দিনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনা মহামারী পরিস্থিতি। এবং শনাক্তের এ ঊর্ধ্বগতি থামাতে কঠোর বিধি নিষেধ কার্যকর করতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। তবে এই পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো বিধি-নিষেধ মানার কোন লক্ষ্যনই দেখা যাচ্ছে না।

যশোরের পৌর এলাকা ও আশপাশের চারটি ইউনিয়নে লকডাউন এবং কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও সাধারণ মানুষের মাঝে তা উপেক্ষার মন-মানসিকতা বেশি দেখা যাচ্ছে। যশোর জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়াতে গত ৯ জুন ২০২১ মধ্যরাত থেকে যশোর ও নওয়াপাড়া পৌরসভাতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এইদিকে,১৬ জুন ২০২১ মধ্যরাতে এই বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সংক্রমণ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়াতে ২৩ জুন ২০২১ মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধের সময়সীমা ও পরিধি বৃদ্ধি করা হয় বলে বলে ঘোষণা করা হয়। এই দিকে, যশোর জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোঃ সায়েমুজ্জামান জানিয়েছেন, করোনা শনাক্তের এ ঊর্ধ্বগতি হার রুখতে লকডাউন কার্যকর করতে কাজ করছে প্রশাসন।

এবং সেইসঙ্গে রোগীর চাপ সামাল দিতে নতুন ওয়ার্ড খোলার পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা এবং পাঁচ পৌরসভা ও ৯ ইউনিয়নে লকডাউন এখোনও বলবৎ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। যশোর জেলায় এখনো পর্যন্ত মোট ১১২ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্তে মারা গেছে। এবং আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯ হাজার ৭৮২ জন রোগী। এবং এরমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন ছয় হাজার ১৪৭ জন রোগী। করোনা মহামারী পরিস্থিতি থেকে বাসতে নিয়মিত হাত মুখ ধূতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।

এই সম্পর্কে  আরও  জানতে নিচে 

.করোনায় আবারও যশোরে ৩ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৫ জন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password