করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ততায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চাকরির বয়স ৩২ করার দাবি

করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ততায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চাকরির বয়স ৩২ করার দাবি

করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ততার দরুণ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩২ চাই শীর্ষক মানববন্ধন সংঘটিত হয়েছে ২৭ জুন রবিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে।ঢাকার শাহবাগ মোড়ে এ মানববন্ধন করে চাকরি প্রত্যাশীরা। তারা দেশের সাংবাদিকদের ও কলাম লেখকদের উদ্দেশ্যে বলেন; প্রিয় কলম যোদ্ধা সাংবাদিক বন্ধুগণ - আপনারা অবগত আছেন আমরা চাকরিপ্রত্যাশী যুব প্রজন্ম বিগত ৩ মাস ধরে করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ততায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স স্থায়ীভাবে ৩২ এ উন্নীতকরণের দাবি নিয়ে সরকারি দপ্তর থেকে দপ্তরে ঘুরেছি।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব(জনপ্রশাসন), মন্ত্রীপরিষদ সচিব, শিক্ষামন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও আরও কয়েকজন বরাবর একাধিকবার স্মারকলিপি ও খোলা চিঠি প্রদান করেছি। প্রিয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের প্রতিনিধিগণ বয়সসীমা ৩২ এ উন্নীতকরণের এই ইস্যুতে আমরা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের (উদাহরণস্বরূপ মাননীয় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী) নিকট হতে কোন নূন্যতম সাড়া পাইনি । এখন তাঁদের নিকট পৌঁছানোর জন্য আপনারা গণমাধ্যম কর্মীরা আমাদের শেষ ভরসা।

গণমাধ্যমকে একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়; আর সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আপনাদের এই মহান পেশায় কিছু নৈতিক- মানবিক দায়িত্ববোধ ও মূল্যবোধের বিষয় নিহিত রয়েছে। আপনাদের নিকট আমাদের করুণ আবেদন ও আর্তি এই যে আপনারা দয়া করে এই বিষয়টি নিয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও মাননীয় জনপ্রশানমন্ত্রীর মুখোমুখি হোন তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করুন। নিম্নোক্ত তথ্য উপাত্ত বিবেচনা করে আপনারা বয়সসীমা ৩২ এর বিষয়টি গণমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে উপস্থাপন করবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি – করোনাকালীন অচলাবস্থায় সকল বয়সের শিক্ষার্থী।

চাকরিপ্রত্যাশীরা ইতোমধ্যেই দেড় বছর হারিয়ে ফেলেছে যা দুই বছরের দিকে ধাবমান। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ হওয়ায় দেড় লক্ষ তরুণ-তরুণী (করোনার শুরুর সময়ে যারা ২৮+ বয়সের ছিলো) চাকরির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ না পেয়েই ৩০ এর গন্ডি অতিক্রম করতে চলেছে যে ছেলেমেয়েরা ২৬ বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শেষ করে সেই করোনা শুরুর সময় থেকে আশায় বসে আছে চাকরির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হবে, তারাও এই দেড় বছর হারাতে চলেছে। সরকারি বিধি মোতাবেক প্রচলিত যে ৩০ বছর বয়স অবধি আবেদনের সুযোগ পাওয়ার কথা করোনার আঘাত কিন্তু প্রকৃতই সেই সুযোগ দিচ্ছে না।

১৯৯১ সালে শেষবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ করা হয় যখন গড় আয়ু ছিলো ৫৭ বছর । এই ৩০ বছরে গড় আয়ু ১৬ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হলেও বৃদ্ধি পাই নাই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২০১১ সালে এসে অবসরের বয়স বেড়ে হয় ৫৯ আর মহান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হয় ৬০। অবসরের বয়স যেহেতু ২ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে সেক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করলে সেটাও আর সাংঘর্ষিক হয় না। প্রাপ্ত তথ্যমতে, করোনাকালে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিমাণ ৮৭% কমে ১৩% এ উপনীত হয়েছে; বেকারত্বের হার ২০% থেকে ৩৫% এ উন্নীত হয়েছে৷ করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ততার স্বীকার এই দেড় লক্ষ চাকরিপ্রত্যাশী বেকারত্বের হার আরও বৃদ্ধি করবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ বা আবেদনের বয়সসীমা ৩০ হলেও বিসিএস স্বাস্থ্য ও জুডিশিয়ারি এর ক্ষেত্রে ৩২ বছর।

অন্যদিকে বিভিন্ন কোটার ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা ৩২ বছর দেওয়া হয় ব্যাকডেট দেওয়ার মাধ্যমে সকল বয়সী শিক্ষার্থী তথা চাকরিপ্রত্যাশীদের ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। চাকরিতে আবেদনের বয়স স্থায়ীভাবে ২ বছর বাড়িয়ে ৩২ বছর করলে সকলেই তাদের হারিয়ে যাওয়া সময় ২ বছর ফিরে পাবে করোনাকালে ভারতের আসাম রাজ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত যুব প্রজন্ম কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট চাল-ডাল বা অর্থ সাহায্য প্রত্যাশা করছে না সরকারি চাকরিপ্রত্যাশী যুব প্রজন্মের দাবি। করোনায় শিক্ষার্থীদের প্রায় ২ বছর সময় জীবন থেকে অতিবাহিত হতে চলেছে।

তাই করোনাকালীন সরকারের সকল প্রণোদনার পাশাপাশি মুজিববর্ষের ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বছরে আমরা বেকার যুবকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট ‘প্রণোদনা স্বরূপ’ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করার দাবি জানাচ্ছি। আওয়ামীলীগ সরকারের ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত ‘প্রতিশ্রুতি’ (বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ) অনুযায়ী করোনাকালীন প্রণোদনা হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২এ উন্নীত করার জোরালো দাবি ও আবেদন জানাচ্ছে এদেশের যুব সমাজ।

করোনা জীবনের যে সময় কেড়ে নিচ্ছে এর চেয়ে বড় বাস্তবতা আর কি হতে পারে! ধন্যবাদ জানাচ্ছি সকল সাংবাদিক বন্ধুদের যারা বর্তমান কোভিডের এই কঠিন সময়ে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন । ৩২ ইস্যুটি গণমাধ্যমে তুলে ধরার আবেদন রইলো। সকলের সুসাস্থ্য ও নিরাপদ পেশাগত জীবন কামনা করছি । কৃতজ্ঞতা সকলের প্রতি । জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।। চাকরিপ্রত্যাশী যুব প্রজন্মের পক্ষে তানভির হোসেন, সাজিদ রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন,আনোয়ার সাকিন, অক্ষয় রায়, সুমনা রহমান, মারজিয়া মুন, মানিক রিপন, সাদেকুল ইসলাম, শারমীন সুলতানা, কাজী কামরুন্নাহার, আকাইদ আকন্দ, নিতাই সরকার, আলমগীর হোসেন, ওমর ফারুক, বাকী বিল্লাহ প্রমূখ উপস্থিত থেকে এ দাবি তুলে ধরেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password