স্বামী হত্যার ৮ মাস পর স্ত্রীর অন্তঃসত্ত্বার খবর, ভাশুর গ্রেপ্তার

স্বামী হত্যার ৮ মাস পর স্ত্রীর অন্তঃসত্ত্বার খবর, ভাশুর গ্রেপ্তার

মাদারীপুরে আলোচিত ইকবাল মোল্লা হত্যাকাণ্ডের নয় মাসের মাথায় মামলার বাদী বড় ভাই মঞ্জুর মোল্লার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী লাকী বেগম। এই মামলার পর সন্দেহ করা হচ্ছে, লাকী বেগম ও তার আপন ভাশুর মঞ্জুর মোল্লার অনৈতিক সম্পর্কের বলি হয়েছেন ইকবাল মোল্লা।

সম্প্রতি লাকী বেগমের ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ও স্বজনদের চাপে এই অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন লাকী। মঞ্জুরের পরিবারের লোকজন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় মাদারীপুর সদর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন তিন সন্তানের জননী লাকী বেগম। এরপর গত বুধবার রাতে সদর উপজেলার শ্রীনদী থেকে মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার উমারখালী গ্রামের সুন্দর আলী মোল্লার দুই ছেলে মঞ্জুর মোল্লা (৪৫) ও ইকবাল মোল্লা (৪০)। বড় ছেলে মঞ্জুর তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন এবং মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়ি আসা-যাওয়া করতেন।

ইকবাল তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। কিন্তু ইকবাল খুন হওয়ার পর স্ত্রী-সন্তান ঢাকায় রেখে ছোট ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতে থাকেন মঞ্জুর। এরইমধ্যে লাকীর অন্তঃসত্ত্বার খবর প্রকাশ পায়।

বাধ্য হয়ে ভাশুর মঞ্জুরের কাছে গর্ভের সন্তানের পিতৃপরিচয় দাবি করেন নিহত ইকবালের দ্বিতীয় স্ত্রী। কিন্তু বিয়ে করতে অস্বীকার করায় সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী গ্রামে বাবার বাড়ি চলে যান এবং ধর্ষণের মামলা করেন। অন্য কোনো রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়ায় স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা সন্দেহ করছেন, ভাশুরের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরেই ইকবাল খুন হতে পারেন।

নিহত ইকবালের প্রথম স্ত্রী মুর্শিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী জীবিত থাকতেই তাদের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তারাও আমার স্বামী হত্যায় জড়িত থাকতে পারেন। এ বিষয়ে আমি মামলা করব।

ধর্ষণ মামলার বাদী লাকী বেগম বলেন, আমার সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য একটা সুষ্ঠু বিচার চাই। আর অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় চাই। তাই আমি মামলা করেছি।

আসামি মঞ্জুর মোল্লা বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর তিন মাস পর থেকে আমাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে লাকীর গর্ভের সন্তান তার নয় বলে তিনি দাবি করেন।

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গত বছরের ২২ জুন সন্ধ্যায় ইকবাল বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন উপজেলার ইশিবপুর থেকে ইকবালের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password