ঘরে বসেই অনলাইনে ভোটের ব্যবস্থার ওপর তাগিদ আইনমন্ত্রীর

ঘরে বসেই অনলাইনে ভোটের ব্যবস্থার ওপর তাগিদ আইনমন্ত্রীর

ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থার ওপর তাগিদ দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে যাতে মানুষ ঘরে বসেই অনলাইনে তার নিজের ভোটটি দিতে পারেন এবং তার ভোট কোথায় গেল তা যেন তিনি নিশ্চিত হতে পারেন। কোন কেন্দ্রে মোট কত ভোট পড়েছে এবং কারা কারা ভোটাধিকার প্রযোগ করেছেন তাদের ছবি ও আইডি নম্বরসহ অনলাইনে তালিকা প্রকাশ করা যায় কিনা সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে হবে।’

সোমবার (২ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভোটার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় সভায় একথা বলেন তিনি।

 

মন্ত্রী বলেন, এ ব্যবস্থা করলে ভোটারের সংখ্যা ও উপস্থিতি নিয়ে কারো মনে কোনো সন্দেহ থাকবে না। যিনি ভোট দেবেন তাকে ভোট গ্রহণের একটি কনফারমেশন স্লিপ দেয়া যায় কিনা সে ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা করা যেতে পারে। আমরা কোনো জায়গায় অনলাইনে আবেদন করলে এবং আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে এরকম স্লিপ পেয়ে থাকি। সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ভিশন পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করতে গেলেও ইভিএমের মাধ্যমে ভোটদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল, রাশিয়া, ফ্রান্স, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, পেরু, কাজাখস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ চালু করলেও বাংলাদেশের কেউ কেউ পুরোপুরিভাবে না জেনেই এ বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন। বাস্তবতা হলো ১৯৭৫ এর পর বাংলাদেশের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যে অপসংস্কৃতি চালু হয়েছিল তা সম্পূর্ণ দূর করতে হলে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, ইভিএম পদ্ধতি এই অপসংস্কৃতি দূর করতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস। এ পদ্ধতিকে আরো আধুনিক ও স্বচ্ছ করার জন্য ধারাবাহিক গবেষণা করে ট্রায়াল অ্যান্ড মোর মেথডের (Trial and More Method) ভিত্তিতে ইভিএম পদ্ধতিকে সর্বাধিক ক্রটিমুক্ত করতে হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আগামীতেও জনগণের এ আস্থা ধরে রাখা। যাতে কোনো অবস্থায়ই এক ব্যক্তি দুই জায়গায় ভোটার হতে না পারে কিংবা রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো দেশের নাগরিক যেন অবৈধভাবে ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে কমিশনকে সজাগ থাকতে হবে। প্রয়োজনে এসব অপরাধের কঠোর শাস্তির বিধি করতে হবে। এসব বিষয়ে সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের আরেকটি বিশাল কর্মযজ্ঞ হলো নির্বাচনী ব্যবস্থার আধুনিকায়নে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারসহ ইভিএম প্রবর্তন। এই কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানাই। বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ, প্রযুক্তির কল্যাণেই বিশ্বের অনেক দেশ উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে গেছে। এখন প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করা দুরূহ ব্যাপার।

নেতিবাচক ধারণা কিংবা অজ্ঞতার কারণে প্রযুক্তি গ্রহণ না করলে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হবে এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। এর অন্যতম উদাহরণ হলো পরপর দুবার বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও তৎকালীন বিএনপি সরকার অজ্ঞতার কারণে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিল এবং পরে এ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে প্রায় একযুগ অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ফলে বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে এবং এর প্রভাব আমরা উপলব্ধি করেছি। এরকম ভুল আর করা যাবে না। যে প্রযুক্তির দ্বারা দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে তা অবশ্যই গ্রহণ করবেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password