২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে বে টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়ার পর ৩ বছর পেরিয়ে গেছে।এরই মধ্যে ভারতের লাইন অব ক্রেডিট নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর অথোরিটি।ভারতের টাকায় বে টার্মিনাল না করার সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবার পর তাতে সবুজ সংকেত মিলিছে এবং বিভিন্ন সূত্রানুযায়ী বিশ্বব্যাংক এ প্রজেক্টে ফান্ডিং করবে।যদিও বিশ্বব্যাংকের পুরো ফান্ডিং বিষয়ে জানা যায়নি।
তবে প্রাথমিকভাবে ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ড্রেজিং এবং চ্যানেল নির্মাণের জন্য এবং সবমিলিয়ে ১.১ বিলিয়ন ডলার বাজেটের এ প্রকল্পের অধিকাংশ ফান্ডিং করবার জন্য বাংলাদেশ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য,বাংলাদেশ এবং চিটাগাং পোর্ট অথোরিটি নিজেও এ বিনিয়োগ করবে। ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের শর্ত জটিল এবং এ শর্তগুলোতেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং পোর্ট অথোরিটি সন্তষ্ট নয়।যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো,এ প্রজেক্টের সকল কাঁচামাল ভারত হতে আনা এবং প্রকল্পের সমস্ত কার্যকলাপে ভারতীয় অথোরিটির পারমিশন লাগার ব্যপারটি যার অর্থ এই পুরো প্রজেক্টের নির্মাণে ভারতীয় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
বাংলাদেশের বেশ কিছু সিদ্ধানের মধ্যে এ সিদ্ধান্তটি বেশ আশাব্যঞ্জক আর তা হলো ভারতীয় কঠিন শর্তে এসব প্রজেক্ট বাস্তবায়ন না করা।মাত্র ৪০০ মিলিয়ন ডলার লাইন অব ক্রেডিট নিয়ে ভারতের এমন শর্ত নতুন কিছু না।ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় তাদের এমন অসংখ্য লাইন অব ক্রেডিট রেলওয়ে,রাস্তাঘাট, হাসপাতাল নির্মাণের জন্য পড়ে আছে যা পরবর্তীতে অন্যান্য মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ভারতীয় পররাষ্ট্রদপ্তর এমনকি বাংলাদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ভারতীয় ডেলিগেটররা প্রায়শই এসব ক্রেডিট সিভিলিয়ান এবং মিলিটারি খাতে ব্যবহারের জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসেন।
প্রথমদিকে চীন নিজেও কঠোর শর্ত দিলেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বেশ কিছু শর্তের জন্য প্রজেক্টে চীনা ফান্ডিং বাতিল হওয়ার পর থেকে চীন কিছু ক্ষেত্রে নমনীয় হলেও ভারত এখনো সে পথে হাটছেনা। অবশ্য,ভারতীয় লোন না নেয়ার কারন এবং ভারতের শর্তের বিষয়গুলো ব্যাবসায়িক চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে জানানো হয়েছে।এও জানানো হয়েছে এ চুক্তিগুলি বাংলাদের জন্য লাভজনক নয়। অন্যদিকে জেটি নির্মাণের কাজ এসব কারনে বিলম্বিত হচ্ছে এবং হয়েছে।
২০২৬ সালের মধ্যেই বন্দরের জেটি নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াবার কোন বিকল্প হাতে নেই। রেলওয়ে অথোরিটি বন্ধর পর্যন্ত আলাদা রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প ও হাতে রেখেছে।বন্দরের জেটির কাজ অগ্রসর হলে সেসব ও গতি পাবে।একই সাথে জেটিতে নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ ও আটকে আছে।এখন, ফান্ডিং নিশ্চিত করে খুব দ্রুত বন্দরের জেটি নির্মাণে হাত দেয়া উচিত।
বন্দরের জেটির টার্মিনাল নির্মাণে অবশ্য সিংগাপুর এবং আরব আমিরাতের কোম্পানির সাথে আগেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ পেলেই প্রকল্প গতি পাবে বলে আশা করা যায়।তবে দেশের ক্রমবর্ধমান আমদানী-রপ্তানীর সাথে তাল মিলিয়ে জেটি দ্রুত নির্মাণ করার কোন বিকল্প বাংলাদেশের হাতে নেই।একই সাথে প্রকল্প দ্রুত শেষ না হলে তা আখেরে কোন সুফল বয়ে আনবেনা।LoC এর কাজগুলো সময় সাপেক্ষ হওয়ায় জাপান এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে হবে।ভারত এবং চীন উভয়ই এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ভাল কোন অপশন হতে পারেনা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন