টাকা হলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করা যায়, আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া যায় না : সামসুল আলম ভূইয়া রাখিল

টাকা হলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করা যায়, আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া যায় না : সামসুল আলম ভূইয়া রাখিল

নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লাকে উদ্দেশ্য করে শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূইয়া রাখিল মন্তব্য করে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানুষ চেনেন,নেতাকর্মী চেনেন। যেই কারণে আপনাকে মনোনয়ন দেয় নাই ভবিষ্যতে ও দিবে বলে মনে হয় না। টাকা হলেই স্বতন্ত্র নির্বাচন করা যায়, কিন্তু আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া যায় না। বর্তমান মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জহিরুল হক ভূইয়া মোহন ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ খানের নেতৃত্বে শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ যখন সুসংগঠিত, তখন আপনি দলের ক্ষতি করার জন্য নীলনকশায় মেতে উঠেছেন।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে এসব মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যবহৃত আইডিতে একটি লিখা পোস্ট করেন সামসুল আলম ভূইয়া রাখিল।

পাঠকের জন্য পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

সিরাজুল ইসলাম মোল্লা (সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য) ৩০-৮-২০২১ খ্রী: যোশর বাসীর উদ্দ্যোগে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে আমাকে ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বার বার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ খান ও শিবপুর থেকে বার বার নির্বাচিত মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ও নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব জহিরুল হক ভূইয়া মোহন সাহেব কে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য দিয়ে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। বি.এন.পি.র সাবেক মহাসচিব আ: মান্নান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হারুনুর রশিদ খানের নেতৃত্বে আমরা দলকে সংগঠিত করেছি। দুর্নীতির দায়ে অব্যাহতি প্রাপ্ত ফারুক চৌধুরী কে ম্যানেজ করে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার আগে কোন প্রর্যায়ে আপনি দলের সদস্য ছিলেন না। এখনও নেই। সেইজন্য শিবপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি সম্পর্কে আপনার ধারনা নাই। তাই মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে জনগনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্ট্রা করছেন।

আপনি বলেছেন আমি বিদ্রাহী প্রার্থী নৌকার বিরুদ্ধে হন নাই ব্যক্তি মোহনের বিরুদ্ধে হয়েছি। এতেই আপনার রাজনৈতিক দৈন্যতা প্রকাশ পায়।নৌকা কোন ব্যক্তির নয়। নৌকা বঙ্গবন্ধুর নৌকা, শেখ হাসিনার নৌকা। মোহন সাহেবকে উনার যোগ্যতা বলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিয়েছেন। আপনি বলেছেন, আমাকে নাকি কবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আপনাকে বলতে চাই, আপনার জানার কথা নয়,কারন আপনি কোন সময় দল করেন নাই। সেই কারণে আপনি জানেন না আমি ১৯৮০ সালে শিবপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম, ১৯৮৫ সালে শিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম, ১৯৮৮ সালে শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের ছাত্র/ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত ভি.পি. ছিলাম, ১৯৯১ সালে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, ১৯৯৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে বি.এন.পির দু:শাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেই অসহযোগ আন্দোলন বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে আমার শিবপুরের বাসভবন, বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,মোটর-সাইকেল জালিয়ে দেওয়া হয় এবং ১২ টি মামলার আসামী হই যা ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মামলা গুলো প্রত্যাহার হয়। আমি ২০০২ সালে শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন আহবায়ক হই।

২০০৪ সালে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হই। ২০১৪ সালে শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। আমার এই বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে লড়াই সংগ্রামে কোন সময়ই আপনাকে পাই নাই দেখি ও নাই। প্রকাশ্যে জনসভায় আপনি বলেছেন আমাকে দলথেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোনদিন যদি আমি দল থেকে বহিষ্কার হয়ে থাকি তাহলে আমি জনগনের সামনে ক্ষমা চেয়ে পদ ছেড়ে দিব। আর যদি আপনি প্রমান করতে না পারেন তাহলে আপনাকে প্রকাশ্যে এই ভুলের ক্ষমা চাইতে হবে। আমার এই বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে আপনি কালি লেপেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানুষ চেনেন, নেতাকর্মী চেনেন। যেই কারণে আপনাকে মনোনয়ন দেয় নাই ভবিষ্যতে ও দিবে বলে মনে হয় না। টাকা হলেই স্বতন্ত্র নির্বাচন করা যায় কিন্তু আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া যায় না। বর্তমান মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জহিরুল হক ভূইয়া মোহন ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ খানের নেতৃত্বে শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ যখন সুসংগঠিত তখন আপনি দলের ক্ষতি করার জন্য নীলনকশায় মেতে উঠেছেন। আপনি বলেছেন দু:সময়ে আমরা থাকবো না। অতীতেও দু:সময়ে আপনি ছিলেন না আমরা ছিলাম, ভবিষ্যতে ও আপনি থাকবেন না আমরাই থাকবো। আমি আপনার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু।

প্রশঙ্গত, সোমবার (৩০ আগস্ট) বিকালে শিবপুর উপজেলার যোশর বাজারে মরহুম আনোয়ার হোসেন ভূইয়া স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, হারুনুর রশিদ খান ও সামসুল আলম ভূইঁয়া রাখিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচন করায় তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো। আওয়ামী লীগের যদি কোন দুর্দিন আসে, আওয়ামী লীগ যদি বিরোধীদল হয়ে যায়, আমি স্পষ্ট বলতে পারি এই হারুনুর রশিদ খানদের কিন্তু আপনারা খুঁজে পাবেন না।

তিনি আরও বলেন, হারুনুর রশিদ খান নাকি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলবেন আমি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছি। আমি বলতে চাই, আমি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচন করি নাই। আমি নির্বাচন করেছি ব্যক্তি মোহনের বিরুদ্ধে। মুক্তিযোদ্ধের শক্তির পক্ষের আমি নির্বাচন করেছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password