বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসি)-এর ১৬ তম নিবন্ধনের চাকরি প্রার্থীদের অপেক্ষার যেন অন্ত নেই। ২০১৯ সালের ২৩ মে এনটিআরসিএ ১৬ তম নিবন্ধন পরীক্ষার বিঞ্জপ্তি প্রকাশ করে। ৩০ আগস্ট, ২০১৯ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর এক মাস পর প্রিলিমিনারির ফলাফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ।
১৫ ও ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১২ নভেম্বর, ২০২০ দীর্ঘ ১ বছর পর লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। অথচ এনটিআরসিএ’র সংবিধিতে সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের কথা রয়েছে। এনটিআরসির পক্ষ থেকে করোনার অজুহাতে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল দেরিতে প্রকাশের কথা জানানো হয়েছে। তবে ১৬ তম প্রার্থীদের মতে করোনা নিছক অজুহাতই মাত্র। তারা বলেন লিখিত পরীক্ষার রেজাল্ট তিন মাসের মধ্যে দেওয়ার কথা, কিন্তু করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয়েছে লিখিত পরীক্ষার প্রায় ৪ মাস পরে (৮ মার্চ, ২০২০)। তাহলে কেন করোনার অজুহাত দিয়ে এর রেজাল্ট প্রকাশের সময় ১ বছরে গিয়ে পৌঁছালো!
এর পর ২ ডিসেম্বর, ২০২০ থেকে ১৬ তমদের ভাইভা পরীক্ষা শুরু করে এনটিআরসিএ। শেষ হয় গত ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (প্রায় ১০ মাস পর)। উল্লেখ্য লকডাউনের কারণে মাঝখানে দীর্ঘদিন আটকে যায় ১৬ তমদের ভাইভা পরীক্ষা।
২০১৯ সালে শুরু, ২০২১ সালে শেষের দিকেও এনটিআরসি ১৬ তমদের নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি। এতে ভীষণ হতাশ ১৬ তম পরীক্ষার্থীরা। এদিকে আবার অনেকের বয়স ৩৫ পার হওয়ার পথে। এনটিআরসিএ’র বিধিতে ৩৫+ বয়সীদের চাকরিতে যোগদানের সুযোগ নেই। তাহলে তাদের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন কি এনটিআরসি-এর দীর্ঘসূত্রিতার জন্যেই নিঃশেষ হয়ে যাবে!
১৬ তম নিবন্ধন পরীক্ষার প্রার্থী মুজাহিদুল ইসলাম নোবেল বলেন, শিক্ষিত হয়েও আজ আমরা বেকার। আমরা আজ পরিবারের বোঝা, জাতির বোঝা, দেশের জিডিপিতে আমাদের অবদান শূন্য। অথচ পড়াশুনা না করা লোকেরাও আজ গর্বের সাথে দেশের জিডিপিতে অবদান রাখছে। তাই আমাদেরকে দ্রুত ফলাফল ও নিয়োগ দিয়ে এ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করা সরকার ও এনটিআরসি-এর মানবিক দায়িত্ব।
আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ৩৫ বছর পর আমরা আর শিক্ষক হওয়ার জন্যে এনটিআরসি’র কাছে আবেদন করতে পারবো না। ইতোমধ্যে আমাদের ৩ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে, অথচ এখনো ফলাফলই পেলাম না। পূর্ব অভিজ্ঞতা ও তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায়, ফলাফল পাওয়ার পর আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ২ বছররেও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। তাহলে আমরা কিভাবে জব পাবো! তিনি আরো বলেন, শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হবে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ততই উন্নত হবে। তাই ১৬ তমদের অতি দ্রুত ফলাফল ও নিয়োগ দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
জান্নাতুন্নাহার বিদ্যা বলেন, আমাদের বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে। অলরেডি ৩ বছর শেষ আমাদের। শিক্ষক নিয়োগের মতো একটা নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল যদি তিন বছরের মধ্যেও প্রকাশিত না হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের শিক্ষা খাত এবং অর্থনীতি। আমরা আর দেরি নয় অতি দ্রুত ফলাফল ও নিয়োগ চাই।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন