শেরপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে চাঁই বিক্রির ধুম

শেরপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে চাঁই বিক্রির ধুম
MostPlay

বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই শেরপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে দেশি প্রজাতির ছোট মাছ ধরার উপকরণ বাঁশের তৈরি চাঁই (মাছ ধরার ফাঁদ) বিক্রির ধুম পড়েছে। উপজেলার হাটবাজারগুলোতে শত শত চাঁই বিক্রি হচ্ছে। এখানকার তৈরি চাঁই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে পাশ্ববর্তী জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

গুণগত মান ভালো হওয়ায় আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন চাঁইশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। তাইতো নিন্মআয়ের অনেক পরিবার বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে চাঁই তৈরিকে বেছে নিয়েছে।

বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি এসব চাঁই ভালো মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মাছশিকারিরাও এসব হাটবাজার থেকে কিনে নিয়ে যান। বর্ষা মৌসুমে চাঁইয়ের কদর বেশি হওয়ায় চাঁই তৈরির সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলো মৌসুমের দুই-তিন মাসেই প্রায় সারা বছরের আয় করে নেন।

চাঁই তৈরীর কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব চাঁই তৈরিতে প্রকারভেদে খরচ পড়ে ৮০ থেকে ২০০ টাকা। বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। আকারে বড় চাঁই তৈরীতে খরচ অনুযায়ী বিক্রির মূল্য নিধারণ করা হয়।

উল্লেখ্য, চাঁই বিভিন্ন এলাকায় বানা, খাদন, খালই, বিত্তি, বুড়ং ও ভাইর নামেও পরিচিত। ছোট প্রজাতির মাছ ধরার সুতি, কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন উপকরণের দাপটের কারণে বাঁশের তৈরি চাঁই বাজারে বেশ প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ১০টি এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষ এই শিল্পের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করলেও এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।

ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের লয়খা গ্রামের আব্দুল মালেক বলেন, আগের মত আর বাঁশ পাওয়া যায় না, বাঁশের দামও অনেক। তাই লাভ খুব বেশি না হলেও বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা থাকায় রাত-দিন পরিশ্রমের মাধ্যমে চাঁই তৈরি করে তারা বেজায় খুশি। এতে একদিকে যেমন সময় কাটে, অন্যদিকে লাভের আশায় বাড়ির সদস্যরা মিলে চাঁই তৈরি করে অভাব ঘুচানোর চেষ্টা করেন।

এ গ্রামের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশা ও সাবিনা জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের পরিবারকে সহায়তা করার জন্য তারাও চাঁই গাঁথে। এতে করে তাদের পড়ালেখার খরচের সমস্যা হয় না।

ঝিনাইগাতী বাজারের ইজারাদার পক্ষের রাজস্ব (জমা) উত্তোলনকারী লিটন মিয়া বলেন, বর্তমানে এই হাটে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১ লাখ টাকার মাছ ধরার সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এ উপজেলার মানুষ ছাড়াও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার মানুষ এ হাটে এসব সামগ্রী কিনতে আসেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password