বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের পাচার করতেন এক চীন নাগরিক। চীনা নাগরিকসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ। নারী পাচারের অভিযোগে জিসাও সুহুই (৩৪) নামের এক চীনা নাগরিকসহ দুইজনকে আটক করেছে খাগড়াছড়ি পুলিশ।রাজধানী উত্তরায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। তিনি জানান, বিদেশে উচ্চ মূল্যে বেতন ও সুবিধার কথা বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে তরুণ-তরুণীদের চীনে পাচার করতো এ চক্র। ২ জুন পানছড়ি থানায় পৃথক দুটি জিডির সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নেমে রাজধানী ঢাকা থেকে পৃথক অভিযানে চক্রের মূলহোতা হেলি চাকমা ওরফে সুমি ও তার স্বামী জিসাও সুহুইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নানা প্রলোভনে চীনে পাচারের উদ্দেশে তরুণ-তরুণীদের সংগ্রহ করছিল হেলি চাকমা। ২ জুন দুই বান্ধবী নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি হওয়ার পর প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার ১২ নং সেক্টরের একটি ফ্ল্যাট থেকে ৫ ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
এ সময় চীনা নাগরিক পাচার চক্রের মূলহোতা জিসাও সুহুইকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রের অপর হোতা হেলি চাকমা ওরফে সুমি এ সময় পালিয়ে যায়। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা থেকে তাকেও গ্রেফতার করে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিউল আজম জানান, রোববার সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উদ্ধার হওয়া ৫ ভিকটিমের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি জিসাও সুহুই এর জবানবন্দী গ্রহণ শেষে তাকে খাগড়াছড়ি কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ভিকটিম নিরাশা চাকমা ও ভেলেন্টিনা চাকমাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
অপর তিনজন আসিফ চাকমা, সাঙ্গাময় তঞ্চঙ্গ্যা ও মুন্নি তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি রাঙামাটি জেলায় হওয়ায় তাদের ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। খাগড়াছড়ির আদালতে জবানবন্দি দেওয়া শেষে নিরাশা চাকমা সাংবাদিকদের জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেলি চাকমার সাথে যোগাযোগ হয়। চ্যাটিংয়ে চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে তাদের ঢাকা যেতে বলেন।
ঢাকায় যাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকাও বিকাশ করেন। ঢাকা যাওয়ার পর ফোন কেড়ে নেয় এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কৌশলে বড় বোনকে বিষয়টি জানালে পুলিশের সহায়তা তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খাগড়াছড়ি থেকে নানা প্রলোভনে তরুণ-তরুণীদের চীনে পাচার করছে একাধিক চক্র। চীনে নেওয়ার পর তাদের অনেকের ভাগ্যে কাঙ্ক্ষিত চাকরির পরিবর্তে জুটেছে নির্যাতন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন