সিটিকে হারিয়ে ইউরোপ সেরা চেলসি

সিটিকে হারিয়ে ইউরোপ সেরা চেলসি

পোর্তোর এস্টাডিও দো দ্রাগাও স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মেগা ফাইনালে চেলসির সাথে পেরে উঠলো না ম্যান সিটি। হেরে গেছে ১-০ গোলে। এর ফলে প্রথমবারের মতো ছুয়ে দেখা হলো না চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। অপরদিকে ২০১২ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপের সিংহাসনে চেলসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এ নিয়ে তৃতীয়বার ফাইনালে উঠে দুবার শিরোপা জিতলো চেলসি। গতবার পিএসজির কোচ হিসেবে শিরোপা না জিততে পারলেও এবার চেলসির হয়ে তা করে দেখালেন টমাস টুখেল।

বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় পোর্তোর এস্তাদিও দো ড্রাগাওয়ে অল ইংলিশ ফাইনালটি শুরু হয়। ম্যাচের শুরুতে চেলসির রক্ষণকে চেপে ধরেছিল ম্যান সিটি। সিটির শুরুটা হতে পারতো দারুণ। অষ্টম মিনিটে এদেরসনের লম্বা করে বাড়ানো বল প্রতিপক্ষের বক্সে খুঁজে পেয়েছিল রাহিম স্টার্লিংকে। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ধীরে ধীরে সেই গেরো খুলতে থাকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দলটি। ম্যাচের ১৪ তম মিনিটের সময় এগিয়ে যেত পারপতো চেলসি। কাই হাভের্টজের বাড়ানো বলে টিমো ওয়ার্নারের শট সোজা সিটি গোলকিপার এদারসনের হাতে চলে যায়। পরের মিনিটে ওয়ার্নার আবার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু তার বাঁকানো শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও বাইরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর চেলসি শিবিরে আক্রমন চালাতে থাকে ম্যান সিটি।

প্রথমার্দের শেষ দিকে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন চেলসির ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। তার বদলি হিসেবে আন্দ্রেস ক্রিস্টেনসেনকে মাঠে নামান টুখেল। এরপর খেলার মোড় ঘুরে যায়। ম্যান সিটি যখন চেলসিকে চেপে ধরার চেষ্টায় মত্ত ঠিক তখন দারুণ এক কাউন্টার অ্যাটাকে উড়তে থাকা সিটিজেনসদের বিপক্ষে লিড নেয় ব্লুজরা। চেলসির হয়ে ম্যাচের ৪২ মিনিটের সময় একমাত্র গোলটি করেন জার্মান ফুটবলার কাই হ্যাবার্টজ। ম্যাসন মাউন্ট মাঝমাঠের বাঁ দিক থেকে লম্বা পাসে বল সামনে বাড়ান। সিটির ডিফেন্ডারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়ে এগিয়ে থেকে ডি বক্সের একটু সামনে থেকে বল নিজের পায়ে নেন হ্যাবার্টজ, এগিয়ে এসে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সিটির গোলরক্ষক অ্যাডারসন, তাকে ফাঁকি দিয়ে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান এই জার্মান। গ্যালারিতে ৬ হাজার চেলসি সমর্থককে আন্দোলিত করে তোলেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ২০তম ম্যাচে এসে প্রথম গোলের দেখা পেলেন তরুণ এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় চেলসি।

বিরতি থেকে ফিরে আরও বিপদে পড়ে যায় গার্দিওয়ালার ম্যান সিটি। আন্তোনিও রুডিগারের সঙ্গে সংঘর্ষে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন কেভিন ডি ব্রুইনা। এর কিছুক্ষণ পর বার্নান্দো সিলভাকে তুলে নিয়ে ফার্নান্দিনহোকে নামান গার্দিওলা। কিন্তু সিটির খেলায় তার খুব একটা প্রভাব পড়েনি। উল্টো ৭৩তম মিনিটে ব্যবধান বাড়াতে পারতো চেলসি। হাভের্টজের বাড়ানো বলে এদারসনের মাথার উপর দিয়ে চিপ করেছিলেন পুলিসিচ। কিন্তু বল দূরের পোস্ট দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। ম্যাচের শেষ দিকে ইংলিশ স্ট্রাইকার রহিম স্টার্লিংকে তুলে নিয়ে বিদায়ী স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরোকে নামান গার্দিওলা। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তবে যোগ করা সময়ে ম্যাচে সমতা ফেরানোর শেষ সুযোগ পেয়েছিল ম্যান সিটি। কাইল ওয়াকারের লম্বা থ্রো-ইন থামাতে হেড নেন পুলিসিচ, কিন্তু বল চলে যায় বক্সের কাছে থাকা রিয়াদ মাহরেজের পায়ে। মাহরেজ দারুণ ভলিতে মেন্ডিকে পরাস্তও করেছিলেন। কিন্তু বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। বাকি সময়ে আঁটসাঁট রক্ষণে সিটিকে হতাশ করে চেলসি। এরপর শেষ বাঁশি বাজতেই উৎসবে মেতে ওঠে চেলসি।

এবারের মৌসুমের শুরুতে লেভারকুসেনকে প্রায় ৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার-ফি দিয়ে আগের কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড হ্যাভার্তজকে দলে নেওয়ায় ভ্রু কুঁচকেছিলেন অনেকেই। জার্মানির ২১ বছর বয়সী এই ফুটবলারই যখন ফাইনালে পার্থক্য গড়ে দিল তখন নিশ্চয় সবার অলক্ষ্যে মুচকি হাসছিলেন চেলসি লিজেন্ড ল্যাম্পার্ড।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password