পুদিনাপাতার উপকারিতা

পুদিনাপাতার উপকারিতা
MostPlay

পৃথিবীতে যতো রকম ওষুধী গুনাগুন সম্পন্ন উদ্ভিদ রয়েছে তাদের মধ্যে পুদিনা বা পুদিনা পাতা অন্যতম। বহুবিদ গুণের কারণে একে অজীর্ণহর, শোক শোভন এবং সুগন্ধিপত্র নামে ডাকা হয় পুদিনা পাতার। বহুগুণে গুণান্বিত ছোট গুল্ম জাতীয় এই গাছটি আমাদের সকলের কাছেই সুপরিচিত। গুণের শেষ নেই পুদিনার। 

চলুন জেনে নেওয়া যাক পুদিনা পাতার জাদুকরী সব উপকারিতাগুলো-

বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে পুদিনা পাতার ব্যবহার :

১. পুদিনাপাতার রস শ্বাসপ্রশ্বাসের নালি খুলে দেওয়ার কাজে সহায়তা করে। ফলে অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় পুদিনাপাতা বেশ কার্যকর। পুদিনাপাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাপ নিলে এবং গার্গল করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

২. পুদিনাপাতার রস ব্যথানাশক উপাদান হিসেবেও কাজ করে। মাথাব্যথা হলে পুদিনাপাতার চা পান করতে পারেন। অথবা তাজা কিছু পুদিনাপাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। জয়েন্টের ব্যথায় পুদিনাপাতা বেটে প্রলেপ দিলে আরাম পাওয়া যাবে।

৩. পুদিনাপাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস; যা পেটের যেকোনো সমস্যার জন্য উপকারী। হজমের সমস্যা এবং পেটের ব্যথা থাকলে খাবার পর ১ কাপ পুদিনাপাতার চা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। ৬-৭টি তাজা পুদিনাপাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে খুব সহজে পুদিনাপাতার চা তৈরি করতে পারেন ঘরে।

৪. শরীর ঠান্ডা রাখার একটি বিশেষ গুণ রয়েছে পুদিনায়। পানিতে কিছু পুদিনাপাতা কিছুক্ষণ ফেলে গোসল করে নিন।

৫ . পুদিনাপাতা অ্যান্টিবায়োটিকেরও কাজ করে। শুকনো পুদিনাপাতা ফুটিয়ে সেই পানি ফ্রিজে রেখে দিন। এক বালতি পানিতে ১০ থেকে ১৫ চামচ পুদিনার পানি মিশিয়ে গোসল করলে গরমে ব্যাকটেরিয়াজনিত দুর্গন্ধ কমে। পুদিনার অ্যাসট্রিনজেন্ট গুণ ঘামাচি, অ্যালার্জিও দূর করে।

৭ . খালি পেটে মধু ও লবণ মিশিয়ে পুদিনা বাটা খেলে কৃমি সারে ।

৮. মূত্রাস্বল্পতা হলো এমন একটি রোগ যার কারণে গরমে অল্প অল্প করে প্রস্রাব হতে থাকে, কোনো কোনো সময় সে সাথে জ্বালাও থাকে। এই রোগ থেকে নিরাময় পাওয়ার জন্য পুদিনার পাতা ৮ থেকে ১০ গ্রাম ভালোভাবে বেটে তাতে সামান্য লবণ ও কাগজিলেবুর রস এবং পোয়াখানিক ঠান্ডা পানি মিশিয়ে শরবতের মতো করে দিনে ২ থেকে ৩ বার খেতে হবে। এর ফলে প্রস্রাব সরল হবে।

ত্বক ও রুপ চর্চায় পুদিনা পাতার ব্যবহার :

১. রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালা কমাতে পুদিনা পাতার রস ও অ্যালোভেরার রস এক সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন সানবার্নের জ্বালা গায়েব।

২. ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তেলতেলে ভাব কমাতে তাজা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

৩. ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। মাসখানেক এইভাবে লাগালে ব্রণের দাগ চলে যাবে আর আপনার ত্বক হবে লাবণ্যময় ।

৪. গোলাপ, পুদিনা, আমলা, বাঁধাকপি ও শশার নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে টোনার তৈরি করে মুখে লাগালে তা ত্বককে মসৃণ করে তোলে।

৫. পুদিনার শেকড়ের রস উকুননাশক হিসেবে খুবই কার্যকরী, এমনকি পাতাও। পুদিনার পাতা বা শেকড়ের রস চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। এক মাসের মধ্য চুল হবে উকুনমুক্ত।

৬. পুদিনা পাতা ত্বকের যেকোনো সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে , ত্বকের
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password