ইসলামই হচ্ছে আমাদের জীবন ব্যবস্থা। আমরা কুরআন হাদিসের আলোকে কথা বলি। মানুষকে সচেতন করাই দ্বিনের দায়ীদের কাজ। আমাদেরকে সন্ত্রাস-দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের নিয়ে যারা হিংসা করেন, সমালোচনা করেন আমরা তাদেরকেও ভালোবাসি। আমাদের স্লোগান হচ্ছে-হেরে যাবে ওদের হিংসা, জিতে যাবে আমাদের ভালোবাসা। এটাই ইসলামের সুমহান শিক্ষা। তিনি বলেন, ২৪ এর রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে আমাদের তরুণ ছাত্র ও যুব সমাজ। এই তরুণদের হাতেই নিরাপদ আমাদের বাংলাদেশ, নিরাপদ লাল সবুজের পতাকা। তরুণ প্রজন্মকে কুরআন-হাদিসের আলোয় আলোকিত করতে হবে। তাহলেই দেশ-জাতি সমাজ উপকৃত হবে। তারুণ্যের আইডল ড. মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী আজ শনিবার ৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা বিভাগের নবাবগঞ্জের বারুয়াখালী মাঠে ঐতিহাসিক তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে এ কথা বলেন।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাস ও লক্ষ লক্ষ তৌহিদী জনতার উপস্থিতিতে ঢাকা বিভাগের নবাবগঞ্জের বারুয়াখালী মাঠে শেষ হয় ঐতিহাসিক তাফসীরুল কুরআন মাহফিল। তারুণ্যের আইডল ড. মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর বক্তব্য শুনতে সকাল থেকেই এ বারুয়াখালী মাঠমুখী শুরু হয় জনস্রোত। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে উপস্থিতি। দুপুরের আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় বারুয়াখালী মাঠ। তবে গত শুক্রবার সন্ধ্যার পরপরই জনস্রোত ছড়িয়ে পড়ে মাঠের বাইরে আশপাশের এলাকায়।
এই মাঠে মাহফিলে এত লোক আগে দেখেনি কেউ। মাঠ ও মাঠের বাইরে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ৩০টি বড় পর্দায় মাহফিল প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এই উপস্থিতিকে কুরআনের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করছেন উপস্থিত মুফাসসিরগণ।
তাফসীর পেশ কালে ড. মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, মানুষের আকৃতি-প্রকৃতি নিয়ে কখনো মন্তব্য করা যাবে না, এ ধরনের কাজ করলে পক্ষান্তরে আল্লাহ কে অপমান করা হয়। ইসলামের আলোকে জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য জেন-জি তথা তরুণ সমাজ সহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি ড. মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী আহ্বান জানান।
মাঠে বিশাল প্যান্ডেল ও আকর্ষণীয় স্টেজ নির্মাণ করা হয়। বিশেষ করে স্টেজে প্রবেশের রাস্তায় তিন স্তরে মেটাল ডিক্টেটর গেইট নির্মাণ করে পরীক্ষা করে সবাইকে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব সহ সরকারি সকল সংস্থার সতর্ক অবস্থান ছিল চোখে পড়ার মতো। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পিডিবির পক্ষ থেকে মাহফিল এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়। যানজট এড়াতে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনায় পুলিশ সর্বাত্মক কাজ করে। মাহফিল পার্শ্ববর্তী এলাকায় যান চলাচল সীমিত করা হয়। মুসল্লীদের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখা হয় মেডিকেল টিম। মাঠ ও মাঠের বাইরে শতাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। প্রশাসনের পাশাপাশি মাহফিল কমিটির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন। মাহফিলের সংবাদ কাভার করতে ঢাকা থেকে আগত এবং স্থানীয় প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার শতাধিক সাংবাদিক সংবাদ কাভার করেন।
মাহফিল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. শাহজাহান শিকদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আলহাজ সাইদুর রহমান শাহীন, আলহাজ রওশন আলী, মো. আইয়ুব হোসেন চুন্নু মিয়া, মো. আশরাফুল ইসলাম মোল্লা, তানভির আহমেদ, মোহাম্মদ হোসেইন জনি, মো. মনির হোসেন, আবুল বাসার সুজন, শামিমুল হক শিমু, মিজানুর রহমান মিজান। মাহফিল পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদের খানের সঞ্চালনায় মাহফিলে বিশেষ বক্তা হিসেবে তাফসীর পেশ করেন মাওলানা মনিরুল ইসলাম মজুমদার, হাফেজ ক্বারী শেখ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান, হাফেজ ক্বারী আব্দুল ওয়াহাব দোহারী ও হাফেজ মাওলানা মহিবুল্লাহ রুম্মান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন