সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ সারাবিশ্বে প্রশংসিত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ সারাবিশ্বে প্রশংসিত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মোঃ এনামুর রহমান বলেছেন, ভৌগলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ঘনবসতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগের মোকাবেলা করতে হয়। তাছাড়া ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী ও বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে । এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। এবছর ঘূর্ণিঝড় 'ইয়াস' মোকাবেলায়ও সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। দারিদ্র্য বিমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা অর্জনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ। দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সারাবিশ্বে।

 রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস- ২০২১ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত "ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডে করণীয় বিষয়ে সচেতনতামূলক মহড়া"য় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রঞ্জিত কুমার সেন,ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাক্তার নাজমুল হক এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান ।

এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙ্গন, খরা, শৈত্য প্রবাহ, অগ্নিকাণ্ড, বজ্রপাত এবং ভূমিধস আমাদের অতি পরিচিত দুর্যোগ। জনসচেতনতা ও পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে যে কোন দুর্যোগ মোকাবিলা করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।আর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সে কাজটাই করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ত্রাণ নির্ভর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে দুর্যোগঝুঁকি হ্রাসমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আগাম সতর্কবার্তা প্রচার ব্যবস্থা শুরু করেন। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদ বাঁচাতে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রচারে সিপিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা হতে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়, যা সর্ব সাধারণের কাছে মুজিব কিল্লা নামে পরিচিত। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে অগ্রসর হয়েই বাংলাদেশ আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

সভাপতির বক্তৃতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে সিপিপি’র যাত্রা শুরু করেছিলেন যাঁরা আগাম সতর্কসংকেত প্রচার এবং সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের জানমাল রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনায় সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক সংখ্যা ৭৬ হাজার ২০ জনে উন্নীত হয়েছে। এই স্বেচ্ছাসেবকদের ৫০% নারী।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, পুরো দেশ জুড়ে আধুনিক আবহাওয়ার রাডার এবং পূর্বাভাস ব্যবস্থা রয়েছে। উপকূলে ৫ হাজারের বেশি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দুর্যোগে প্রাণহানির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে সাম্প্রতিক কালে একই মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি একক সংখ্যায় নেমে এসেছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password