নওগাঁর পত্নীতলায় পাখির কলকাকলীতে ঘুম ভাঙছে দিঘী পাড়ার মানুষের

নওগাঁর পত্নীতলায় পাখির কলকাকলীতে ঘুম ভাঙছে দিঘী পাড়ার মানুষের

পরিযায়ী পাখির কিচির মিচির কলকাকলীতে ঘুম ভাঙছে নওগাঁর পত্নীতলায় উপজেলার কাঞ্চন দিঘী পাড়ার মানুষের। ঋতু বৈচিত্র্য ষড় ঋতরু বাংলাদেশে শীত এলেই প্রকৃতি সাজে নতুন সাজে দেশের বিভিন্ন স্থানের মত পত্নীতলার প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী জলাশয় কাঞ্চন দিঘী প্রাকৃতির রূপে সেজেছে নতুন সাজে। প্রকৃতির রূপটাকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা অতিথি পাখির দল সাজিয়েছে আরো নতুন করে।

নওগাঁ পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের কাঞ্চন গ্রামে অবস্থিত এ দিঘী। শহর থেকে প্রায় ৩ কি.মি দূরে কাঞ্চন গ্রামে চির নিদ্রায় শায়িত হযরত যহর উদ্দীন (রঃ) মাজার সংলগ্নে অবস্থান হওয়াই অনেকে যহর উদ্দীনের দিঘীও বলে থাকেন । উপজেলা সদর নজিপুর বাস্ট্যান্ড থেকে অটোর্চাজার, মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশা সহ যে কোনো যানবাহন যোগে যাওয়া যায়। শীতের আগমনে দিঘিতে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখির দল। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো দিঘি এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘীপাড়ের গাছগাছালিতে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। পাখিদের অবাধ বিচরন, জলকেলি ও খুনশুটি কিচিরমিচির কলতানে মুখর দিঘীটি।

ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় খাবারের সন্ধানে বেড়িয়ে পরে । পাখিদের এই মুহুর্মুহু কলতানের টানে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে দিঘিতে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমী মানুষের। প্রতি বছর শীতের শুরুতে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি আমাদের দেশে আসে বাহারি রংয়ের এসব অতিথি পাখি। পাখিরা সুদূর সাইবেরিয়ার হিম শীতল আবহাওয়ার কবল থেকে রেহাই পেতে অভয়াশ্রম হিসেবে বেছে নেয় মিষ্টি শীতের দেশ বাংলাদেশকে। দিঘী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর শীতের সময় এ দিঘীতে ছোট সরালি, পানকৌরী, শামুখখোল, বালিহাঁস, সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসে।

প্রতিদিনই অনেক মানুষ আসছেন এসব অতিথি পাখি দেখার জন্য। পাখি শিকার তাদের বিরক্ত না করতে আমরা সবসময় মানুষকে নিরুৎসাহিত করি কারণ অতিথি পাখিরা আমাদের দেশে আসে অতিথি হয়ে। কেউ যেন এদের শিকার করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা এলাকাবাসীরা সারাক্ষণ সজাগ আছি। দিঘীর পূর্বপারের বাসিন্দা সবিতা রানী , মালতি রানী সহ অনেকেই বলেন প্রতিবছর শীতে এখানে শত শত পাখি আসে এছাড়া পাড়ার প্রতিটি গাছেই আছে দেশীয় পাখি ঘুঘু, বক, সারক, পেঁচা। আমরা বাচ্চাদের সহ সবাইকে বলেছি পাখিদের বিরক্ত না করে। পাখিদের সাথে তাদের গড়ে উঠেছে গভীর মিতালী। পাখির ডাকেই ঘুম ভাঙছে দিঘী পারের মানুষের। আজ রবিবার সকালে সরেজমিনে দিঘীতে দেখা যায় শতশত পাখির জলকেলি পাখা ঝাপটানো অবাধ বিচরনের নয়নাভিরাম দৃশ্য।

ওই গ্রামের কৃতি সন্তান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক চৌধুরী বলেন প্রতি বছর শীত আসলেই এসব পাখির আগমন ঘটে, পাখি শিকার করতে নিষেধ করা হয়েছে ,সাড়ে ১৪ একর আয়তন এ দিঘী ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি বর্তমানে লিজ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে । পত্নীতলা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি সুমন কুমার জানান সারা বছরই এখানে দেশীয় প্রজাতির পাকি থাকে শীত মৌসুমে আসে পরিযায়ী পাখি। দিঘীটি লিজ দিয়ে বানিজ্যিক ভাবে মৎস চাষ করায় পাখি গুলো নিরাপদে থাকতে পারে না সন্ধ্যায় আসে আবার দিনের বেলায় চলে যায়। আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করেছি যাতে পাখি শিকার না করে।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন পাখি শিকার বা হত্যার ব্যাপারে সবসময় আমরা মানুষকে নিরুৎসাহিত করি, কোন পাখি আহত হলে আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password