আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর জামিন দেননি হাইকোর্ট

আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর জামিন দেননি হাইকোর্ট

অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীকে আগাম জামিন দেননি হাইকোর্ট। তাদের আবেদনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দেকার দীলিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘শুনানির পর হাইকোর্ট আগাম জামিন দিতে অপারগতা প্রকাশ করে আবেদনটি ফেরত দিয়েছেন।’

এদিকে, এ মামলায় মো. মঞ্জুর আলম শিকদার, তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীসহ চারজনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। তাদের সম্পত্তি অবরুদ্ধ করে রাখার আদেশও দেওয়া হয়েছে। বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্য দুজন হলেন- আবুল কাশেম ও মোটরসাইকেল সরবরাহকারী মো. আল মামুন।

আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীকে আসামি করে সম্প্রতি রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ছাড়া আসামির তালিকায় নাম রয়েছে আবুল কাশেম নামের এক ব্যক্তি এবং এস কে ট্রেডার্সের নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আল মামুনের।

মামলাটি করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (এসপি) আল মামুন। ২০২০ সালের ২৬ জুলাই আলেশা মার্ট যৌথ মূলধন কম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর থেকে নিবন্ধন পায়। পরে প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইলেন্স নেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আলেশা মার্টের যাত্রা শুরু ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি।

যাত্রা শুরুর পর কম মূল্যে মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য সরবরাহের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে বহু গ্রাহককে পণ্য না দিয়ে কিংবা টাকা ফেরত না দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে তারা টাকা পাচার (মানি লন্ডারিং) করে।

আলেশা মার্টের চারটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৪২১ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৩১ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ কেনা হয়েছে। ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৫ আগস্টের মধ্যে এই সম্পদ কেনা হয়।

আলেশা মার্টের পক্ষে কম মূল্যে পণ্য কেনার প্রচারণা চালিয়েছে এস কে ট্রেডার্স। আর প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে ১০০ কোটি টাকা দিয়েছেন মঞ্জুর আলম। প্রস্তাবিত ব্যাংকটির পরিচালক হতে আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান এই টাকা দেন।

‘গ্রাহকদের ৪২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ, আলেশা মার্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা’ শিরোনামে গত ১৮ জুন একটি জাতিয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সিআইডির বরাত দিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। সে প্রতিবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মনিরুজ্জামানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, অর্থ পাচারের মামলায় মামলায় আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password