হোটেল-রেস্তোরাঁয় বেড়েই চলেছে খাবারের দাম

হোটেল-রেস্তোরাঁয় বেড়েই চলেছে খাবারের দাম

আগে ২০/ ২৫ টাকায় অনেক ভালো মানের খাবার খাওয়া যেত। এখন এটা অনেকটাই ইতিহাস হবার পথে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দরে হোটেল-রেস্তোরাঁয় বেড়েই চলেছে খাবারের দাম। নিম্নআয়ের মানুষের ডাল-ডিম দিয়ে একবেলা ভাত খেতেই চলে যাচ্ছে ৫০ টাকা। ছোট রেস্তোরাঁর তুলনায় বড়গুলোতে দাম বেড়েছে আরও বেশি। মালিকপক্ষ অবশ্য অরাজক পরিস্থিতির জন্য করপোরেট সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে মনিটরিংয়ের তাগিদ অর্থনীতিবিদদের।

নূরুল ইসলাম কাজ করেন রংমিস্ত্রি হিসেবে। কোনোদিন কাজ থাকে আবার কোনোদিন থাকে না। কিন্তু কাজ থাকুক আর না-ই থাকুক পেট থেমে থাকে না। পরিবার ঢাকা শহরে না থাকায় তাই ভরসা কমদামি রেস্তোরাঁ। কমদামি খুঁজেও এখন খুব একটা পোষায় না। শুধু ভাত-ডাল-ডিম খেলেও গুনতে হয় অন্তত ৫০ টাকা। মাছ-মাংস খেতে গেলে এক বেলাতেই গুনতে হবে ১০০ টাকার ওপরে।

তাই সেগুলো বাদের খাতায় অনেক নিম্ন আয়ের মানুষের। সব ধরনের খাবারের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ। তারা বলছেন, আগে যেখানে তিন বেলা খেতে লাগত ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, এখন একবেলা খেতেই লাগছে ১০০ টাকা। ফলে ডাল-ডিম আর ভর্তা দিয়ে খেয়েও এখন দিন পার করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা এখন নিজে খেয়ে বাঁচবেন না সংসার চালাবেন? এ বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত।

ঢাকা শহরে একটা বড় অংশের ভরসা রেস্তোরাঁ। আবার কেউ কেউ বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে সময় কাটাতে বেছে নিচ্ছেন রেস্তোরাঁ। কিন্তু আকাশছোঁয়া খরচের চাপে এখন অনেকটা বাধ্য হয়েই রেস্তোরাঁবিমুখ তারা। ছোট রেস্তোরাঁয় যতটা খাবারের দাম বেড়েছে, বড় রেস্তোরাঁয় বেড়েছে সেই তুলনায় বেশি। অরাজক পরিস্থিতির জন্য রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি অবশ্য দায় চাপাচ্ছে করপোরেট সিন্ডিকেটের ওপর।

রেস্তোরাঁ মালিকরা বলছেন, তারা বিক্রি করে পোষাতে পারছেন না, আর গ্রাহকরা ঠিকমতো খেতে পারছেন না। তবুও সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন খাবারের দাম বেশি না বাড়াতে। এতে আগের থেকে লাভও অনেক কমে গেছে। বর্তমানে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাও কষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেই মত তাদের।

এ অবস্থার জন্য কিছু করপোরেট সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলছেন, করপোরেট লুটপাটকারীদের নিয়ন্ত্রণের কারণেই বেশি দামে পণ্য কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। একদিকে বাজারের ভোগ্যপণ্যের দাম লাগামহীন ঊর্ধ্বমুখী। আবার সেই পণ্য দিয়ে রেস্তোরাঁয় এসে দ্বিগুণ মূল্যস্ফীতির চাপে পড়েন ক্রেতা। পকেট ফাঁকা হচ্ছে সাধারণ মানুষের। তাই মনিটরিংয়ের বিকল্প নেই। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আর সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password