এমএমডিপি-র জন্য নেদারল্যান্ডে স্কলারশিপ পেলেন দেবব্রত ঘোষ

এমএমডিপি-র জন্য নেদারল্যান্ডে স্কলারশিপ পেলেন দেবব্রত ঘোষ
MostPlay

একের পর এক নিজের দক্ষতার প্রমান দিয়ে যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধিন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)’র সহকারি পরিচালক বর্তমানে কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের দায়িত্বে নিয়োজিত দেবব্রত ঘোষ।

দেবব্রত ঘোষ নেদারল্যান্ডের UNU-MERIT Maastricht University-তে ৩রা এপ্রিল ২০২৩ থেকে ২৩শে জুন ২০২৩ অনুষ্ঠিতব্য মাইগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম (MMDP) ২০২৩-এ অংশগ্রহণের জন্য একটি সম্পূর্ণ বৃত্তি লাভ করেছেন। এটি একটি পূর্ণ-সময়ের তিন মাসের প্রোগ্রাম যা নেদারল্যান্ডসের মাস্ট্রিচতে অনুষ্ঠিত হবে। তার স্কলারশিপ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU)-এর অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর মাইগ্রেশন পলিসি ডেভেলপমেন্ট (ICMPDF) এর মাইগ্রেশন পার্টনারশিপ ফ্যাসিলিটি (MPF) এর মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

মাইগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম (এমএমডিপি) ২০১৩ সাল থেকে ইউএনইউ-মেরিট পরিচালিত একটি সক্ষমতা-বৃদ্ধি প্রোগ্রাম। প্রোগ্রামটি ইইউ নেবারহুড, ইস্টার্ন পার্টনারশিপ, আফ্রিকা, পশ্চিম বলকান এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে মাইগ্রেশন ব্যবস্থাপনায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা এবং নীতিনির্ধারকদের জন্য অফার করা হয়। তিন মাস পূর্ণ-সময়ের জন্য চলমান, কোর্সটি অংশগ্রহণকারীদের সাথে বক্তৃতা এবং ইন্টারেক্টিভ সেশন সহ বিভিন্ন শিক্ষাদান এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি ব্যবহার করে। হ্যান্ডস-অন ব্যবহারিক অনুশীলনে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়, বিশেষ করে প্রবলেম বেসড লার্নিং (PBL) পদ্ধতি।

এই MMDP তিনটি কোর্স নিয়ে গঠিত: অভিবাসন ব্যবস্থাপনা এবং সুরক্ষা, অভিবাসন এবং উন্নয়ন, এবং মাইগ্রেশন নীতি। প্রতিটি কোর্স চার সপ্তাহের জন্য চলে এবং এতে মাইগ্রেশন ডেটার ভূমিকা সহ কোর্সের বিষয় সম্পর্কিত বিভিন্ন মডিউল রয়েছে; আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন; উন্নয়নের জন্য মাইগ্রেশন বাড়ানো; শ্রম অভিবাসন ব্যবস্থাপনা; ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট; এবং পলিসি কোহেরেন্স এবং গ্লোবাল মাইগ্রেশন গভর্নেন্স।

এর আগে ২০২২ সালে দেবব্রত ঘোষ ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের অর্থায়নে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত জেন্ডার, ইনক্লুশন অ্যান্ড দ্য ফিউচার অফ ওয়ার্ক (এশিয়া এবং প্যাসিফিক) বিষয়ক আঞ্চলিক একাডেমিতে যোগ দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ফেলোশিপ প্রাপ্ত হন। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার অর্থায়নে ইতালির সানরেমো শহরে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যানিটারিয়ান ল’তে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন কোর্সে যোগদানের জন্য সম্পূর্ণ বৃত্তি লাভ করেন।

দেবব্রত ঘোষ ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর কুমিল্লা অফিসের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং গত ৫ বছরে বিভিন্ন সাহসী উদ্যোগ এবং উদ্ভাবনী কার্যক্রমের মাধ্যমে কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসকে আজ বিদেশগমনেচ্ছু, বিদেশগামী এবং বিদেশ ফেরত কর্মীসহ জনসাধারণের মাঝে আস্থার ক্ষেত্রে পরিণত করেছেন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে ২০২২ সালের কুমিল্লা জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় অংশগ্রহনকারী ৭৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস ১ম স্থান এবং মহান স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী উপলক্ষ্যে মুক্তির উৎসব ও সুবর্নজয়ন্তী মেলায় তৃতীয় পুরস্কার লাভ করে।

২০১৮ সালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা এবং ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলায় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, কুমিল্লা শ্রেষ্ঠ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া অভিবাসী কর্মী এবং তাদের পরিবারের প্রতি অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের Refugee and Migratory Movements Research Unit (RMMRU) বা রামরু কর্তৃক ‘সোনার মানুষ সেবা সম্মাননা-২০১৯’ লাভ করেন।

জনসাধারণকে সুশৃংখল, স্বচ্ছ এবং সন্তোষজনক সেবা প্রদানের জন্য সহকারী পরিচালক দেবব্রত ঘোষকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ২০২০-২১ অর্থ বছরে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন এবং জাতীয় শুদ্ধাচার’ পুরস্কারে ভূষিত করে। অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সেবা সম্প্রসারণ, আন্তর্জাতিক ও বেসরকারী সংস্থার সাথে সমন্বয় সাধন এবং কার্যক্রম বাস্তবায়নে আন্তরিক সহযোগিতার স্বীকৃতিস্বরূপ আইসিএমপিডি, হেলভেটাস বাংলাদেশ, আইওএম, ব্র্যাক, ওকাপ, ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন দেবব্রত ঘোষকে Letter of Appreciation প্রদান করে।

কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিতকরণ এবং নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণে দেবব্রত ঘোষের অক্লান্ত পরিশ্রম, আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে আজ কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস জনসাধারণের আস্থা ও ভরসার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ার অন্যতম চ্যালেঞ্জসমূহ যেমন উচ্চ অভিবাসন ব্যয়, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, ভিসা ট্রেডিং, অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষের প্রক্রিয়া ও আইন-কানুন সম্পর্কে অজ্ঞতা, ইত্যাদি মোকাবিলায় তার গৃহীত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপসমূহ যেমন কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে মনোরম পরিবেশে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে অফিস স্থানান্তর, জনবান্ধব অফিস ব্যবস্থাপনা, সুষম আর্থিক ব্যবস্থাপনা, অফিস ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন, উন্নত সেবা প্রদান, প্রকাশনা ও প্রচারণা, অংশীজনের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন ও উন্নয়ন, অভিবাসী সততা স্টোর উদ্বোধন, প্রাক-বহির্গমন প্রশিক্ষণ চালুকরণ, সিটিজেন চার্টার ও অভিযোগ বক্স স্থাপন, ইত্যাদি সেবা প্রত্যাশী এবং সেবা গ্রহণকারীদের সন্তুষ্টি বিধান করছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password