মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আহত, মারা গেছে গরু

মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আহত, মারা গেছে গরু
MostPlay

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী তমব্রু এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশি আহত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্থলমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক যুবকের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান।

আহত অন্য থাইং তংচঙ্গ্যা (২৮) ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হেডম্যানপাড়া এলাকা বাসিন্দা মৃত অংকেথাইন তংচঙ্গ্যার ছেলে। সীমান্তবর্তী ৩৫ নম্বর পিলার এলাকায় গরু চরাতে গেলে মাইন বিস্ফোরণে আহত হন। আর তার সঙ্গে থাকা একটি গরু মারা যায়। ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, গত কয়েকদিন গুলির আওয়াজ না থাকায় সীমান্তের মানুষ শান্তিতে ছিল। কিন্তু শুক্রবার আবারও গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে। এতে করে সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামগুলোর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।

হালকা অস্ত্রের পাশাপাশি ভারী অস্ত্রের আওয়াজ হচ্ছে ওপারে। এতে সীমান্ত এলাকায় তাদের কাঁচা ঘর-বাড়িঘর কিছুক্ষণ পর পর কেঁপে উঠছে। তিনি স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আরও জানান, শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক কৃষক যুবক আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তার বাড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হেডম্যানপাড়ায়। আহত অন্য থাইং তংচঙ্গ্যাকে সিএনজি করে হাসপাতালে নেন স্থানীয়রা। সীমান্তবর্তী ৩৫ নম্বর পিলার এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারগুলো গরু-ছাগল ও শুকর চরাতে নিয়ে যায়।

সেখানে মিয়ানমার সীমান্তবাহিনীর পূতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে অন্য থাইং আহত হন বলে জেনেছি। এসময় তার সঙ্গে থাকা একটি গরু মারা যায়। আহতের মা ইয়াং মে চাকমা জানান, গরু নিয়ে ফিরে আসার পথে মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে স্থল মাইনের বিস্ফোরণ ঘটে। মিয়ানমারের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে তার ছেলের পা উড়ে গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা ফেরদৌস স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক কৃষক আহত হওয়ার খবরটি শুনেছেন বলে জানান।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান জানান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক আহত যুবককে হাসপাতালের জরুারি বিভাগে আনা হয়। তা একটি পা বিচ্ছিন্ন ছিল। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে সন্ধ্যার পর চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, টানা চারদিন বন্ধ থাকার পর আবারও মিয়ানমার অভ্যন্তরে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার বেলা ১১টার পর ফের ব্যাপক গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্তের এপারও। এই নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তবাসীর মধ্যে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

গত একমাসের অধিক সময় ধরে মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির সঙ্গে সেদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা, হামলা চলছে। তাদের অভ্যন্তরীণ হামলায় ব্যবহৃত গোলা দুই দফায় এসে পড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে। এতে করে সীমান্তের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে সীমান্ত ঘেঁষা বিভিন্ন ক্ষেত খামারে যেতে ভয় পাচ্ছিল স্থানীয়রা। এরই জেরে শুক্রবার বিকেলে স্থলমাইনে আহত হয়েছেন বাংলাদেশি যুবক।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password