নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ

নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ

শরীর গরম হয়ে ওঠেছে মাটিকাটা সিন্ডিকেটের অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের। মাটি কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। দিনে রাতে শত শত ডামট্রাক করে মাটি যাচ্ছে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে।সূত্রমতে, উপজেলার কোট বহুরিয়া, মীর দেওহাটা মন্দিরাপাড়া একশত একর জায়গার এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে মাটাকাটার নামে পরিবেশের ধ্বংসযজ্ঞ। এভাবে মাটি কাটার ফলে নদীর উপর তিনটি বাধঁ দিয়ে সড়ক, কৃষক ও ফসলের ক্ষতিসাধনসহ পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। আর মাটি কাটার এই মহাযজ্ঞের নেতৃত্বে রয়েছে কমপক্ষে ৫ টি প্রভাবশালী মহল। ১০ থেকে ১২ টি ভেক্যু মেশিন দিয়ে প্রায় ৪০-৫০ টি ড্রামট্রাকযোগে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে স্থানীয় ইটভাটাগুলোতে।

উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা গ্রামের ইটভাটার মালিক মোঃ ফজল মিয়া, ফরিদ মিয়া, শহিদুর রহমান শহিদ, মোতালেব মিয়া, আকবর মিয়া, আসাদসহ গংরা এই মাটি কাটার মহাযজ্ঞের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

সরজমিনে, বুধবার দুপুরে (১৯ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কোট বহুরিয়া, মন্দিরাপাড়া,মীর দেওহাটা এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা মিলেছে। লৌহজং নদীর কোট বহুরিয়া, মীর দেওহাটা এলাকার নদীর উপর ভরাট করে তিনটি রাস্তা বানানো হয়েছে। দিনে রাতে ড্রামট্রাকযোগে চলছে মাটি বিক্রি। নদীর উপর বাঁধ দেওয়ার ফলে নদীর গতিপথ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে নৌ যোগাযোগ বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গেছে বোরো আবাদ ও ধ্বংস হচ্ছে মৎস সম্পদ।

অভিযোগ রয়েছে, কেউ কেউ স্বেচ্ছায় মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে তাদের জমি বিক্রি করলেও অনেকে বাধ্য ও জিম্মি দশায় জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। জমি বিক্রি না করলে এমনভাবে মাটি কেটে নেওয়া হয় যে বিক্রয়ে অনিচ্ছুক ব্যক্তির জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে কমমূল্যে আবাদি জমি বিক্রি করে দেয় স্থানীয় কৃষকরা।মন্দিরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক মেম্বার ডাঃ ইন্তাজ আলী অভিযোগ করে বলেন, মাটি ব্যবসায়ীরা তার জমির পাশের জমি ক্রয় করে ১০-১৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেওয়ার সময় তার জমিও কেটে নিচ্ছে। এনিয়ে দুই বার তাদের বাধা দিলেও তারা মানছে না। এলাকার কৃষি জমি রক্ষার স্বার্থে প্রশাসনের কাছে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রতি বছরই এভাবে কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহল। এতে করে কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। শত শত মাটির ট্রাক রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় ব্যাপক ধূলোয় বাড়ছে রোগ-ব্যধি, নদীও হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য।মাটি ব্যবসায়ী আকবর ও ইটভাটা মালিক ফরিদ মিয়ার সাথে কথা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে মিমাংসা করার প্রস্তাব দেন।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক জানান, আমরা প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ মাটি ব্যবসা বন্ধ করে চলেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলোও বন্ধ করা হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password