প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতায় মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা নিরাপদ বসবাসসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করলেও তারা নেত্রীর সেই মহানুবুবতার প্রতিদান দিতে পারেনি। উপরোন্তু রোহিঙ্গারা এখন ইয়াবা পাচারে নিজেদেরকে পুরোপুরি জড়িয়ে ফেলেছে। তারা সেটাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে। মিয়ানমারে পথ ঘাট তাদের চেনা জানা থাকায় সীমান্তরক্ষী বিজিবি দিনরাত পরিশ্রম করেও ইয়াবা পাচার পুরোপুরি প্রতিরোধ করতে পারছে না।
ক্যাম্প ভিত্তিক যেসব রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারে সক্রিয় তাদেরকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া এখন রোহিঙ্গা নেতাদের নৈতিক দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। কেননা গুটি কয়েক ইয়াবা কারবারি রোহিঙ্গার জন্য পুরো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বদনামের শিকার হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতার সাথে আলাপ করা হলে তারা এসব কথা তুলে ধরেন।
রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ নুর জানায়, তারা ২০১২ সালে সীমান্তের নাফনদী পার হয়ে কুতুপালং এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। সে জানায় সরকার কোন দাতা সংস্থা তাদের কোন প্রচার সাহায্য সহযোগীতা করেনি। তথাপিও কোন রোহিঙ্গা ইয়াবা ব্যবসা করেনি। ১৯৯১ সালে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়ার কথা স্বীকার করে রোহিঙ্গা নেতা জাফর আলম প্রকাশ ডাঃ জাফর জানায়, তারা ২৮ বছর ধরে কুতুপালং ক্যাম্পে বসবাস করছে। কোন রোহিঙ্গা এ পর্যন্ত ইয়াবা অথবা কোন প্রকার মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত হয়নি দাবী করে ওই রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ২০১৭ সালে ২৫ আগষ্টের পর যেসব রোহিঙ্গাদের প্রধানমন্ত্রীর দয়া পরবশ হয়ে আশ্রয় দিয়েছেন তারাই মূলত সমস্ত রোহিঙ্গাদের বদনামের ভাগি করেছে।
তিনি বলেন, ইউএনএইচসিআর এর তথ্য মতে এসব রোহিঙ্গাদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ। এদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা পাইকারী ও খুচরা ইয়াবা বিক্রি করছে। ২৫ শতাংশ রোহিঙ্গা সরাসরি মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে ক্যাম্পে মজুদ করছে বলে কুতুপালং ক্যাম্পের একজন খুচরা ইয়াবা কারবারি স্বীকার করেছে। গত বুধবার কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সদস্যরা বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার ইয়াবাসহ ২ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করে উখিয়া থানা পুলিশের নিকট সোর্পদ্দ করেছে।
এর আগে পালংখালী বিজিবি’র সদস্যরা নিয়মিত টহলদান কালে সীমান্তের নলবনিয়া এলাকায় অনুপ্রবেশকারী ২জন রোহিঙ্গাকে গতিরোধ করার চেষ্টা করলে রোহিঙ্গারা বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে। এসময় বিজিবিও পাল্টা গুলি বর্ষণ করলে ঘটনাস্থলে ২ জন রোহিঙ্গা মারা যায়। বিজিবি তাদের কাছ থেকে ২ রাউন্ড কার্তুজ একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে উখিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবুল মনসুর জানান, তিনি যোগদানের পর থেকে যে কটি মাদকের মামলা হয়েছে ওইসব মামলার প্রায় আসামী রোহিঙ্গা নাগরিক। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, কতিপয় এনজিওর আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকা বেশ কিছু রোহিঙ্গা নাগরিক দেশটাকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে টেলে দিচ্ছে। এখন পাড়া মহল্লায় হাত বাড়ালে ইয়াবা পাওয়া যাচ্ছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাকাটাকাটির জের ধরে খুন হচ্ছে। বলতে গেলে ইয়াবার কারণে নারী প্রতি সহিংসতাসহ সব ধরনের অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে আশংকাজনকভাবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন