কনেকে নকল স্বর্ণালংকার দেয়ায় বর ও বরযাত্রীকে গণধোলাই, অতঃপর

কনেকে নকল স্বর্ণালংকার দেয়ায় বর ও বরযাত্রীকে গণধোলাই, অতঃপর

ঢাকার ধামরাইয়ে বিয়ে করতে এসে কনেকে নকল সোনার গহনা উপহার দেয়ায় বরসহ বরযাত্রীদের আটক করে গণধোলাই দিয়েছে কনেপক্ষ।
তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য ক্ষতিপূরণবাবদ দাবি করা হচ্ছে নগদ ৯ লাখ টাকা। এ নিয়ে ওই বিয়ে বাড়িতে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা ও থমথমে অবস্থা।
শনিবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম টরোকায়।


এলাকাবাসী জানান, মাসখানেক আগে ওই গ্রামের মো. আবদুল মান্নান মিয়ার মেয়ে ও কুশুরা নবযুগ ডিগ্রি কলেজছাত্রী মোসাম্মৎ জয়নব আক্তারের সঙ্গে সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার ইয়ারপুর গ্রামের মো. শুক্কুর আলীর ছেলে মো. শাকিলের বিয়ের দিনক্ষণ ধার্য হয়। ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে কাবিন রেজিস্ট্রি সম্পন্নও হয়েছে।


পূর্ব নির্ধারিত দিনক্ষণ অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে গরু, মহিষ ও খাসি জবাই করে মেজবানির আয়োজন করা হয়। ব্যাপক ধুমধামের মধ্য দিয়ে কনের বাড়িতে চলে উৎসবের আমেজ।
এ দিকে বিকাল ৩টার দিকে বরযাত্রী আসে ওই কলেজছাত্রীর বাড়িতে। বিকাল ৫টার দিকে বিবাহ অনুষ্ঠানে বরের পক্ষে থেকে কনেকে সোনার গহনা স্বরূপ মাথার টায়রা প্রদান করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে গুজব রটে যায় ওই বিয়ে বাড়িতে বরপক্ষের দেয়া সোনার গহনা নকল সোনার তৈরি।


এরপর কনের খালু মো. আরফানের নির্দেশে বরকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। আর বরযাত্রীদের ঘরের ভেতরে আটক করা হয়। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ছবি তুলতে বাধা প্রদান করে কনেপক্ষের লোকজন।


বর মো. শাকিল আহাম্মেদ নকল সোনার গহনা দেয়ার কথা স্বীকার করে অনুতপ্ত হন। তিনি বলেন, ঘটনাটি খুবই খারাপ হয়েছে। কনেপক্ষের সঙ্গে প্রতারণা না করলে আজ আমাদের এমন করুণদশা হতো না। এখন বিয়ে হচ্ছে না উল্টো কনেপক্ষ আমাদের কাছে ৯ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করছে। তাদের দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত আমাদের ছাড়বে না বলে কনেপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে।


বরযাত্রী রেবেকা সুলতানা জানান, মানসম্মানের কিছুই রইল না। বিষয়টি আগে জানতে পারলে এ বিয়ের বরযাত্রী হয়ে কখনোই আসতাম না। এত ছোটলোকি কারবার আর কোনোদিন দেখিনি।
এ ব্যাপারে কনের খালু মো. আরফান আলী জানান, বরপক্ষ আমাদের সঙ্গে চরমভাবে প্রতারণা করেছে। সোনার গহনার পরিবর্তে দিয়েছে নকল সোনার গহনা।

বিয়ের অনুষ্ঠানে আমাদের প্রচুর খরচ হয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ মেয়েকে বিয়ে দিতে কষ্ট হবে। এ জন্য তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত তাদের কোনোক্রমেই ছাড়া হবে না।
এ ব্যাপারে কাওয়ালীপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. রাসেল মোল্লা বলেন, এ ব্যাপারে কেউ আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। খোঁজ-খবর নিয়ে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password