বিস্ফোরণে তৈরি সৌরঝড় আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীর উপর

বিস্ফোরণে তৈরি সৌরঝড় আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীর উপর
MostPlay

সর্বশক্তিমান সূর্য। পৃথিবীর আলো আর শক্তির উৎস। কিন্তু এবার সেই সৌরশক্তিই বিপজ্জনক হতে চলেছে আমাদের গ্রহের পক্ষে। সূর্যের শরীর নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি আশঙ্কার ইঙ্গিত পেয়েছেন। তাঁদের অনুমান, সূর্যের শরীরে (Sunspot) প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে গিয়েছে। আর তার প্রভাব পড়তে চলেছে পৃথিবীর কমিউনিকেশন সিস্টেমে। যেমন, ওই বিস্ফোরণের রেশ পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে পাওয়ার গ্রিডকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া GPS, স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনও।

কীভাবে কয়েক আলোকবর্ষ দূরে থাকা সূর্যের শরীরে বিস্ফোরণের প্রভাব এখানে এসে পড়বে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে, কয়েকটি বিষয় প্রাথমিকভাবে বুঝে নিতে হবে। Sunspot বা সূর্যের কলঙ্ক আসলে অন্তস্থলে থাকা একটি গভীর অন্ধকার গহ্বর, চাঁদের কলঙ্কের মতোই। গনগনে আগুনের আঁচে তপ্ত সূর্যের অন্তস্থলের এই গহ্বরের তাপমাত্রা কিন্তু হিমাঙ্কের নিচে। ক্রমাগত সংকোচনের ফলে সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে। সূর্যে এ ধরনের সবচেয়ে বড় গহ্বরটির নাম AR2770।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, সেখানেই ঘটে গিয়েছে প্রকাণ্ড বিস্ফোরণ। যার ফলে তৈরি হয়েছে সৌরশিখা (Solar Flare)। এই সৌরশিখা আসলে বড়সড় চৌম্বকীয় তরঙ্গ। একে সৌরঝড় (Solar Storm)ও বলা হয়। আর সূর্যেকার মধ্যেকার এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে বলা হয় – Coronal Mass Ejection (CME)। অন্যান্যবার সৌরকলঙ্কে বিস্ফোরণের ফলে যে মাত্রায় শক্তি বা সৌরশিখা তৈরি হয়, এবার তা কয়েকগুণ বেশি। আর সেটাই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সৌরশিখার চৌম্বক তরঙ্গের প্রভাব বায়ুমণ্ডলে ইতিমধ্যেই পড়ছে। অন্য সময়ে সূর্যের সবচেয়ে কাছে যে বায়ুস্তর থাকে, সেখানেই আটকে যায় সৌরশিখার শক্তি। কিন্তু এবার কয়েকগুণ বেশি শক্তি উৎপন্ন হওয়ায় তা পৃথিবীর কাছাকাছি স্তরে পৌঁছে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। যার ফলেই GPS, পাওয়ার গ্রিডের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হতে পারে।

শুধু আমাদের গ্রহই নয়, গোটা সৌরমণ্ডলই এর দ্বারা প্রভাবিত হতে চলেছে। এমনকী বিজ্ঞানীদের ধারণা, বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে ইলেকট্রন, প্রোটনের মতো যে শক্তিকণাগুলি ক্রমশ আবর্তিত হয়ে চলেছে, এই সৌরশিখার দাপটে তাদের চলনও পালটে যাওয়ার সম্ভাবনা। ফলে সেখানেও একটি ক্রিয়া-বিক্রিয়া হতে পারে। সবমিলিয়ে, সম্প্রতি সূর্যের Coronal Mass Ejection-এর ঘটনার প্রভাবে গোটা জগতেরই অনেক কিছু ওলটপালট হয়ে যেতে পারে। এমনই আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password