প্রেমের টানে প্রেমিকের বাড়ি ছুটে গিয়ে প্রেমিকার মাথায় হাত

প্রেমের টানে প্রেমিকের বাড়ি ছুটে গিয়ে প্রেমিকার মাথায় হাত
MostPlay

ফেসবুকে আট মাস ধরে প্রেম, প্রেমের টানে প্রেমিকের বাড়ি ছুটে গিয়ে কলেজ ছাত্রী প্রেমিকা দেখতে পান প্রেমিক ইজি বাইক চালক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। সাথে সাথে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো কলেজ ছাত্রী প্রেমিকার। মন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তার। ফিরে আসতে চাইলো নিজ বাড়িতে। কিন্তু প্রেমিক ও স্থানীয়রা তরুণীকে আটকে রেখে ভয় ভীতি দেখিয়ে জোড় করে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এমন সময় খবর পেয়ে এক আওয়ামী লীগ নেতা ওই তরুণীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। 

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ২নং খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামের জনৈক ব্যাক্তির অনার্স পড়ুয়া মেয়ে সুমি (২০) (ছদ্ম নাম) এর সাথে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার আমতলা গ্রামের সেলিম মীরের ছেলে ইজিবাইক চালক রিয়াজ (২৬) এর সাথে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ আদান প্রদানের মাধ্যমে প্রেমের সূচনা হয়। এরপর ধীরে ধীরে তাদের প্রেম গভীর হতে থাকে। প্রেমিক রিয়াজ প্রথমেই তার শারীরিক সমস্যা ও ইজি বাইক চালানোর কথা লুকিয়ে ছিলো প্রেমিকা সুমির কাছে। সুমি এসব কিছু না জেনেই সরল বিশ্বাসে ভালবেসে গেছে রিয়াজকে। এভাবেই ৭/৮ মাস ধরে ফোনের মাধ্যমে চলতে থাকে তাদের প্রেম।  

গত (১৭ জুন ২০২০) তারা সিদ্ধান্ত নেয় দুজনে এক হবে এবং বিয়ে করে ঘর বাঁধবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রেমিকা সুমি ও প্রেমিক রিয়াজ পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সুমি গত (২৪ জুন বুধবার) সকালে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ছুটে যান প্রেমিক রিয়াজের কাছে। সেখানে গিয়ে প্রেমিককে দেখে সুমির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো। রিয়াজ যে প্রতিবন্ধী তা এই প্রথম দেখলো সুমি। এরপর জানতে পারলো প্রেমিক কোনোরকম পড়াশোনা জানা একজন ইজিবাইক চালক। এসব দেখে সুমির মাথা ঘুরতে থাকে এবং সে সেখান থেকে বাড়ি চলে আসতে চায়। 

কিন্তু রিয়াজ ও তার পরিবারের লোকজন সুমিকে আটকে রাখে এবং জোর করে রিয়াজের সাথে বিবাহ দিতে চাপ সৃষ্টি করে ও ভয় ভীতি দেখায়। এদিকে সুমির পরিবার হন্নে হয়ে খুঁজে বেড়ায় মেয়েকে। কিন্তু কোথাও কোনো খোঁজ পায়না তারা। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার মঠবাড়িয়া থেকে প্রেমিক রিয়াজের চাচা ইউপি সদস্য খলিল মীরের ফোন আসে তরুণীর বাড়িতে। খবরে পেয়ে শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খাঁন মহিউদ্দিন বিষয়টা নিয়ে কথা বলেন খোন্তাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম সরদার এর সাথে। তিনি বিষয়টি তাকে বুঝিয়ে বললে গতকাল শুক্রবার সকালে ট্রলারযোগে স্থানীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে তাইজুল ইসলাম মঠবাড়িয়া আমতলা ছুটে যান। সেখানে গেলে ওই ছেলের পরিবার রিয়াজ ও সুমির বিবাহর প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আ.লীগ নেতা তাইজুল নিজ ভূমিকায় সেখান থেকে সুমিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে এবং পরিবারের হাতে তুলে দেয়।     

এ ব্যাপারে খোন্তাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম সরদার বলেন, অনেক খোঁজাখুঁজির পর ওই ছেলের বাড়ী খুঁজে পাই। ওই ছেলের সাথে মেয়ের কখনই মিল হতে পারে না। মেয়েটি শরণখোলার রায়েন্দা সরকারি কলেজে অনার্স পড়ে। তারা মেয়েটিকে আটকে রেখে ছেলে মেয়ের বিবাহ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তা আমরা করতে দেয়নি। মেয়েকে সেখান থেকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password