বৃষ্টির অজুহাতে আবারো লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

বৃষ্টির অজুহাতে আবারো লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

ভোর থেকেই রাজধানীতে বৃষ্টি। লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কিছুতেই। কাঁচাবাজারের সব পণ্যে এখন দাম বাড়লেই সেটি আর কমছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। একটি পণ্যের দাম কমলে, অন্যটির বাড়ে কয়েকগুণ।

কাঁচাবাজারে এমনটাই অভিযোগ ভোক্তাদের। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়ে গেছে মাছ, মাংস ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আজ শুক্রবার  সকালে রাজধানীর কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টির কারণে বাজারগুলোতে তেমন ক্রেতা নেই। তার পরও সবজির চড়া দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।

 জলাবদ্ধতার কারণে ছুটির দিনে বাজারে ক্রেতা সমাগম বেশ কমেছে। কিন্তু দামের উত্তাপ কমেনি। শুক্রবার (১২ জুলাই) বহদ্দারহাট, চকবাজার, কাজীর দেউড়ি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বেড়ে যাওয়া কাঁচা মরিচের দাম কমছে না।

এদিকে বেড়েই চলেছে অন্য নিত্য পণ্যের দামও। বাজারে টমেটো কেজি প্রতি ১৮০-২০০ টাকা, বরবটি ১০০-১১০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২২০-২৫০, গাজর ২০০-২১০, শসা ১০০-১১০, বেগুন ১০০-১১০ ও পটল ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ঝাঁঝ বেড়েছে পেঁয়াজেরও।

গত সপ্তাহেও যে পেঁয়াজ কেজিতে বিক্রি হয়েছে ৮০-৯০ টাকায় তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এছাড়াও আলু ৬০-৭০, আদা ৩২০, রসুন ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। দোকানদাররা বলছেন, বন্যার কারণে জোগানে কিছুটা ভাটা পড়েছে।

পাইকারি মোকামেই বেড়েছে দাম। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা পর্যায়ে। যার প্রভাবে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ছেই। ক্রেতাদের অভিযোগ, কখনো বৃষ্টি, কখনো গরম, কখনো আন্দোলন আবার কখনো সড়কে চাঁদাবাজির অজুহাতেই দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। দেখার যেন কেউ নেই।

তারা বলছেন, আমাদের আয় তো বাড়ছে না কিন্তু প্রতিনিয়ত সব কিছুর দামই বেড়ে চলছে। এমনি চলতে থাকলে সব পণ্যই ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাবে। সরকারের উচিত এখনই দামের লাগাম টেনে ধরা। রহিম উল্লাহ নামে এক ক্রেতা বলেন, যেভাবে সব কিছুরই দাম বাড়ছে তাতে করে পরিবার নিয়ে শহরে বসবাস করা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজার সিন্ডিকেট করে সব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

এক দোকানে যে দামে বিক্রি হচ্ছে সব দোকানেই সে দামে বিক্রি করা হচ্ছে। পণ্যের নির্দিষ্ট দামের চেয়ে ২০ টাকা ৩০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, দিন দিন বাজার নিয়ন্ত্রহীন পড়ছে। আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য হচ্ছে না। নিয়মিত বাজার তদারকি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।

গত সপ্তাহের তুলনায় মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০-৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০-২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০-১২৫০ টাকা ও প্রতি ডজন ডিম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এছাড়া মাছের বাজারে প্রতিকেজি তেলাপিয়া ২০০-২৩০ টাকা ও চাষের পাঙাশ ২০০-২৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৬৫০ টাকা ও চাষের কৈ ৩০০-৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সবজির ক্ষেত। তার মধ্যে আবার ছাত্র আন্দোলনের ফলে ব্যাহত হচ্ছে পরিবহন ব্যবস্থা। যারকারণে সরবরাহ কম হওয়ায় বাড়ছে দাম। তারপরেও আমরা আমরা চেষ্ট করছি কম দামে পণ্য বিক্রি করতে। আমাদেরও তো বাঁচতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password