নওগাঁর মান্দায় সৎমায়ের নির্যাতন সইতে না পেরে এক স্কুলছাত্রী চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ শনিবার দুপুরে হোমিও চিকিৎসক আব্দুস সালামের প্রসাদপুর বাজারের বাসা থেকে ওই স্কুল ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর সৎমা রোজিনা বেগম পালিয়ে যান।
মারা যাওয়া স্কুলছাত্রী আফরিন আক্তার রিভা (১৪) নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার কাঁটাখালি গ্রামের বাসিন্দা আকবর হোসেনের মেয়ে। সে মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজারে একটি ভাড়া বাসায় থেকে মান্দা থানা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে নবম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছিল।
স্কুলছাত্রী রিভার ছোটভাই আল রিয়াদ জানায়, ‘গতকাল শুক্রবার সৎমা রোজিনা বেগম বোন রিভাকে মারধর করে। এরপর থেকে সে আর খাওয়া-দাওয়া করেনি। রাতে বাজার থেকে মুরগির গ্রিল কিনে বোনকে খাইয়েছি। এরপর সে আলাদা ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। আজ শনিবার সকালে আমি প্রাইভেট পড়ার জন্য কোচিং সেন্টারে যাই। বেলা দশটার দিকে ফিরে দেখি বোনের ঘরের দরজা বন্ধ। ওরে স্থানীয় লোকদের সহায়তায় দরজা ভেঙে দেখি ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ ঝুলছিল।’
স্কুলছাত্রীর মা রুমালি আক্তার বলেন, ‘সম্প্রতি আমার স্বামী রোজিনা বেগম নামের এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। দু সপ্তাহ আগে তাকে এনে আমার ভাড়া বাসায় তোলা হয়েছে। এ নিয়ে মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে গত সোমবার (২১ জুলাই) আমাকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় আমার সঙ্গে মেয়ে রিভা ও ছেলে রিয়াদকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমার স্বামী তাদের যেতে দেয়নি। আজ আমাকে মেয়ের লাশ দেখতে হল। এ ঘটনার জন্য আমার স্বামী ও সতীন দায়ী। তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, লাশের পাশ থেকে পুলিশ একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে। ওই চিরকুটে আত্মহননের জন্য বাবা আকবর হোসেন ও সৎমা রোজিনা বেগমকে দায়ী করেছে ওই স্কুলছাত্রী।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মনসুর রহমান চিরকুট উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে একটি চিরকুট। ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন