হাতিয়ায় চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে মেম্বার খুন

হাতিয়ায় চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে মেম্বার খুন
MostPlay

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলা চরঈশ্বর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা রবিন্দ্র চন্দ্র দাস (৪৮) কে তার নিজ বাড়ির সামনে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। দলীয় কোন্দল ও পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা।  

গত বুধবার (৯ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রবিন্দ্র চন্দ্র দাস চরঈশ্বর ৩নং ওয়ার্ডের স্বতিষ চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য।

ইউপি সদস্য রবিন্দ্রের সঙ্গে থাকা শ্রমিকলীগ নেতা আল আমিন অভিযোগ করে বলেন, আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে আসার পথে আজাদ চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যানের ভাতিজা সোহেল, ছেলে অমি, রহিম ডাকাত ও নাজিমসহ কয়েকজন আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় আমরা মোটরসাইকেল রেখে পালানো চেষ্টা করলে তারা রবিন্দ্রকে ধরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আল আমিনসহ মোটরসাইকেলে চরঈশ্বর থেকে ওছখালী নিজের বাসায় আসছিলেন রবিন্দ্র চন্দ্র দাস। পথে তাদের মোটরসাইকেলটি চরঈশ্বর প্রধান সড়কের খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ির সামনে এলে একদল দুর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য কর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে গতিরোধ করে। এ সময় মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা আল আমিন পেছন দিকে দৌড়ে পালিয়ে গেলেও হামলাকারীদের হাতে আটকা পড়ে রবিন্দ্র। হামলাকারীরা প্রথমে রবিন্দ্রকে গুলি ও পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং তার হাতের কব্জি ও রগ কেটে ফেলে যায়। পরে একদল টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রবিন্দ্রের লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের পিতা স্বতিষ চন্দ্র দাস বলেন, রাতে বাংলা বাজার থেকে ওছখালি যাচ্ছিল রবিন্দ্র। রাতে তার মোবাইল বন্ধ পেয়ে ওছখালি বাসায় কল দিয়ে জানতে পারি সে বাসায় যায়নি। এর কিছুক্ষণ পর একজন মোবাইলে জানান, রবিন্দ্রকে 'কেটে ফেলছে'।

চরঈশ্বর ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাশেদ উদ্দিন জানান, আব্দুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার একক স্বেচ্ছাচারিতার কারণে রবিন্দ্র মেম্বারসহ আমাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ১১ জন মেম্বার একসঙ্গে লিখিতভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয়। এ নিয়ে আজাদ চেয়ারম্যান আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। এর জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।

নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদ বলেন, আমি বর্তমানে ঢাকা রয়েছি। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমি, আমার পরিবারের ও দলের কোনো লোকজন জড়িত নেই। একটি চক্র তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এই বিষয়কে কেন্দ্র করে হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, রাতে রবিন্দ্র চন্দ্র দাস ও আল আমিনসহ আরও দুজন তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে ওছখালি আসার পথে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে, তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password