চলতি ২০২১ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ, সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খোলা যাবে সেটাই নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে আগামী ২২ মে পর্যন্ত। এমনকি সংক্রমণ বাড়তেই থাকায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাসহ ১৪ দফা নির্দেশা জারি করা হয়েছে সোমবার (২৯ মার্চ)।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্কুল-কলেজ খোলা সম্ভব না হলে এসএসসির জন্য ৬০ দিন ও এইচএসসির ৮৪ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়িয়ে শেষ করা সম্ভব হবে না। সিলেবাস শেষ না হলে আয়োজন করা যাবে না এই দুই বড় পাবলিক পরীক্ষা। তাই গত বছরের মতো এবারও অটোপাস দিয়ে সনদ দেয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষা আয়োজন করতে শিক্ষা বোর্ডগুলো সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের বিলম্ব ফি ছাড়া ফরম পূরণে আগামী ১ থেকে ৭ এপ্রিল ও ফি’সহ ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ফরম পূরণের সময় ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর স্কুলে নির্বাচনী পরীক্ষা ছাড়াই নিবন্ধনভুক্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছেন।
অন্যদিকে এসএসসি পরীক্ষা নিতে প্রশ্নপত্র নির্বাচন ও মডারেশন কাজ চূড়ান্ত করে তা ছাপাতে বিজি প্রেসে (সরকারি মুদ্রণালয়) পাঠানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শেষ হলে প্রশ্ন ছাপানোর কাজ শেষ করা হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনে সার্বিক প্রস্তুতি শুরু করেছি। আগামী জুন-জুলাইকে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রশ্নপত্র তৈরিসহ সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে রাখা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, দেশে করোনা পরিস্থিতি যেভাবে বাড়ছে তাতে চলতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তবে এসব পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে। সিলেবাস শেষ না হলে এ দুই পাবলিক পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে না। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশে এসএসসির প্রায় ২৩ লাখ শিক্ষার্থীর একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়া অসম্ভব কর্মযজ্ঞ।
ওই কর্মকর্তারা বলেন, যদি চার বা পাঁচ মাসের মধ্যেও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, সে ক্ষেত্রে মোট উত্তরপত্রের ৫০ শতাংশ কমানো হতে পারে। পরীক্ষার জন্য তিন ঘণ্টা সময়ের বদলে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা করে পরীক্ষা নেয়ারও বিকল্প পরিকল্পনা চিন্তা করা হচ্ছে। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
করোনার কারণে চলতি বছর সময় পিছিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা আগামী জুন এবং এইচএসসি পরীক্ষা আগস্ট মাসে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেজন্য এসএসসির ৬০ দিন ও এইচএসসির ৮৪ দিন ক্লাস ধরে পরিমার্জিত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও প্রকাশ করে শিক্ষাবোর্ড।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন