আটি ভাওয়াল উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবস উদযাপিত: দাবি জাতীয়করণের

আটি ভাওয়াল উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবস উদযাপিত: দাবি জাতীয়করণের

শিক্ষকের কণ্ঠস্বর: শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার” এই স্লোগানে ঢাকার কেরানীগঞ্জের আটি ভাওয়াল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গতকাল বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জনাব আমিনুল হকের সভাপতিত্বে শনিবার সকাল ৯.৩০ ঘটিকায় শিক্ষক মিলনায়তনে শিক্ষক দিবস নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন স্কুল ও কলেজ শাখার শিক্ষকবৃন্দ।

শিক্ষকদের আলোচনায় শিক্ষক দিবসের মর্যাদার পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের বিষয়টি মূখ্য হয়ে উঠেছে। তাঁদের দাবি, সরকার শিক্ষকদেরকে প্রকৃত মর্যাদা দিতে ব্যর্থ। এদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন সবচেয়ে কম বলে শিক্ষার মানোন্নয়ন করা সম্ভবও হচ্ছে না। কারণ এত অল্প বেতন ও ভাতায় স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। তাই মেধাবীরা শিক্ষকতার মতো মহামূল্যবান পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে দেশের শিক্ষা খাতের।

শিক্ষকরা বেতন বৈষম্য নিয়েও তুলেছেন নানা প্রশ্ন। তারা সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন ৮ম শ্রেণি পাসের পিয়নের বেতন যদি ১৬ হাজার টাকা হয়, তাহলে অনার্স-মাস্টার্স পাস করে প্রিলি-রিটেন ও ভাইভায় তীব্র প্রতিযোগিতা করে যারা এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি পান তাদের বেতন কেন মাত্র ১২৫০০ টাকা হবে?!

তাছাড়া শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় মাত্র ১০০০ টাকা। সে টাকা দিয়ে কীভাবে বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায় তাও সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন তাঁরা। উঠেছে উৎসব ভাতা নিয়েও প্রশ্ন। বেসিকের মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা পায় তারা। এই অল্প পরিমাণ টাকা দিয়ে ঈদে কিংবা পূজায় তাদেরকে বরাবরই হতাশ থাকতে হয়। এসব সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে।

শিক্ষকদেরকে মুখে মুখে সম্মান না দেখিয়ে কাজে সম্মান দেখানোর দাবি জানান শিক্ষকরা। একজন শিক্ষক বলেন, আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছিলেন। তাছাড়া বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টা জনাব ওয়াহেদ উদ্দিন মাহমুদ এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

বর্তমানে দেশ চালানোর ভার যেহেতু শিক্ষকদের হাতে, তাই এখনই শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের উৎকৃষ্ট সময়। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠান প্রধান জনাব আমিনুল হক সভাপতির বক্তব্যে বলেন, শিক্ষকতা মহান পেশা। আমাদেরকে সর্ব প্রথম শ্রেণিকক্ষে সর্বোচ্চ উজাড় করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের দাবিদাওয়া আদায়ের ক্ষেত্রে অভিন্ন থাকতে হবে।

এটা আমাদের ন্যায্য অধিকার। বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতির চাপে শিক্ষকরা নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। তাই আমাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। এজন্য সবাই নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পাশাপাশি দাবিদাওয়া আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password