ইসলামি বক্তা আবু ত্বহাকে মাহফিলে বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় দুটি মামলা

ইসলামি বক্তা আবু ত্বহাকে মাহফিলে বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় দুটি মামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের কানাইপুরে ইসলামি বক্তা আবু ত্বহাকে ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় বিক্ষুব্ধদের করিমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন শাহ বাদী হয়ে ফরিদপুর কতোয়ালী থানায় গত সোমবার দিবাগত রাতে এ মামলাটি দাযের করেন।

মামলায় কর্তব্যরত পুলিশের উপর হামলা করে তিন পুলিশ সদস্যকে আহত করা, পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ আনা হয়েছে। সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতযালী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল গফ্ফার বলেন, এ মামলায় ভিডিও ফুটেজ দেখে আট জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুইশ থেকে আড়াইশ ব্যাক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

আব্দুল গফফার আরও জানায় ওই ভাঙচুরের ঘটনায় আরও একটি মামলা করার করেছেন নান্নু শেখ নামে এক ব্যাক্তি। তিনি করিমপুর হাইওয়ে পুলিশ ভবনটি যে বাড়িতে অবস্থিত সেই বাড়ির মালিক। হামলার কারনে তার ব্যাক্তিগত একটি মাইক্রোবাস ও ভাড়ায় চালিত একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়।

প্রসঙ্গত গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকায় অবস্থিত ঢাকা-খুলনা মহা সড়কে দক্ষিণ পাশে নির্মাণাধীন আমজাদ সরদারের জুট মিল মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঢাকা-খুলনা মহা সড়ক অবরোধ করার ঘটনাও ঘটে। পুলিশ ২২টি সর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই মাঠে মারকাযুত তাকওয়া ইসলামি মাদ্রাসা ও সরদার বাড়ী জামে মসজিদের উদ্যোগে বার্ষিক এ ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওই ওয়াজ মহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল তরুণ ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের।

রবিবার সন্ধ্যা থেকে ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওয়াজ মহফিল মঞ্চে থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় প্রশাসনের আপত্তির কারনে আবু ত্বহা মুহাম্মদ বক্তব্য দেবেন না। পরে ওয়াজ মাহফিল সমাপ্ত ঘোষণা করা হয। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই সময় ওয়াজ মাহফিলের মঠে প্রায় ১০ হাজার শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘোষণায় শ্রোতাদের কিছু অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিক্ষুব্ধ জনতা পাশের ঢাকা-খুলনা মহা সড়কে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং মহা সড়কে সকল ধরনের যান বাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। ওই সময় বিক্ষোভ কারিদের একটি ক্ষুদ্র অংশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত করিমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ করে। বিক্ষুব্ধরা ইট ছোড়ে এবং ফাড়িতে থাকা পুলিশের দুটি গাড়ি ও একটি অ্যাম্বুলেন্সের কাচ ভেঙ্গে ফেলে।

পরে ফরিদপুর থেকে দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সর্টগানের গুলি ছুড়ে রাত সোয়া ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, পুলিশ ফাড়িতে হামরার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে যে মামলাটি দায়ের করেছেন গত সোমবার রাত পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলে আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password