মির্জা ফখরুলের বাসায় ডিম নিক্ষেপ

মির্জা ফখরুলের বাসায় ডিম নিক্ষেপ

আসন্ন উপনির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে এস এম জাহাঙ্গীরকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার একদিন পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভাড়া বাড়িতে বঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকরা ডিম ও ইট  ছুঁড়ে মেরেছে। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় মির্জা ফখরুলের বাসার সামনে শতাধিক নেতাকর্মী জড়ো হয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি ডিম ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে।

এ সময় মির্জা ফখরুল তার বাসায় অবস্থান করছিলেন। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাতে বিবৃতি দেয় দলটির স্থায়ী কমিটি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আজ বিকেলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উত্তরার বাসভবনে কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল বহিরাগত ব্যক্তি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বাসার ক্ষতিসাধন করে। আজ সন্ধ্যায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভা এই ঘটনার পেছনে সরকারি মদদ রয়েছে বলে মনে করে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সারা দেশে গুম, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতনের যে মহামারী চলছে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতেই সরকারের এজেন্টরা এ হামলা চালিয়েছে। সভা এই অনাকাঙ্ক্ষিত সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।’

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেস্বর ঢাকা-১৮ আসনসহ ঢাকা-৫, নওগাঁ-৬ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থীদের ভার্চুয়াল সাক্ষাতকার নেয় দলটির সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড। এদিন ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন পাওয়া (গতকাল শুক্রবার ঘোষণা হয়েছে) মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর ও উত্তর বিএনপির যুগ্মসম্পাদক কফিল উদ্দিন সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়। ওই ঘটনায় মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্য প্রার্থীরা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে এবং বৃহত্তর উত্তারার বিএনপি নেতারা জাহাঙ্গীরের পক্ষে অবস্থান নেয়। এই অবস্থায় ঘটনার বিএনপির যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন তদন্তের দায়ি এক সদস্যের কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির প্রতিবেদন মহাসচিবের কাছে জমা দেওয়ার একদিন পর গতকাল শুক্রবার জাহাঙ্গীরকে বিএনপি প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। এতে করে মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। 

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, ওই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিএনপি মহাসচিবের উত্তরার বাসায় এ হামলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরের পর থেকে একদল নেতাকর্মী বিএনপি মহাসচিবের বাসার সামনে অবসন নিয়ে এস এম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। প্রতিবাদের শেষ পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা মির্জা ফখরুলের বাসভবনে শতাধিক ডিম ছুঁড়ে মারতে দেখা যায়। ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনে নয়জন প্রার্থী বিএনপি থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এর মধ্যে বঞ্চিত সাতজন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরাই উপস্থিত ছিলেন। তারা একজোট হয়ে এস এম জাহাঙ্গীরকে প্রতিহত করার ঘোষণাও দেয়। এ বিষয়ে মনোনয়ন বঞ্চিত কফিল উদ্দিন বিডিটাইপকে বলেন, ‘আমি জানি না কারা মহাসচিবের বাসার সামনে বিক্ষোভ করেছেন, কারা ডিম-পাথর ছুঁড়েছেন। আমি ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিলাম। তখন মহাসচিব আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি বলেছি, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। গত ১২ সেপ্টেম্বর গুলশানে যারা মার খেয়েছিলেন, তারা বিচার না পেয়ে ওই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী বাহাউদ্দিন সাদী জনান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত। যদি কারো মধ্যে রাগ- ক্ষোভ থাকেই তাহলে তা দলীয় ফোরামে আলোচনা করতে পারতেন। কিন্তু দলের মহাসচিবের বাসায় এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।মির্জা ফখরুলের বাসায় ডিম ছুঁড়ে মারার বিষয়ে জানতে চাইলে মহাসচিবের ঘনিষ্ট শায়রুল কবির খান বলেন, ‘এ ঘটনায় মহাসচিব খুব মর্মাহত হয়েছেন। নেতাকর্মীদের কিছু বলার থাকলে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বলতে পারতেন। তিনি একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। সেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো অনাকাঙ্ক্ষিত।’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password