পায়রা সমুদ্র বন্দরে পানির ট্যাংকি নিয়ে জনমনে নানা গুঞ্জন

পায়রা সমুদ্র বন্দরে পানির ট্যাংকি নিয়ে জনমনে নানা গুঞ্জন

দেশের সর্ব দক্ষিণে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত তৃতীয় পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য নির্মিত আবাসনে পানির ট্যাংকি ভূমি সমতল করে নির্মান করা হয়।এটি নির্মান এর পর থেক ভূমি সমতল অবস্থায় ছিল। উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মেরাউপাড়ায় অবস্থিত ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত ১ নং আবাসনে কর্মরত শ্রমিকের নিকট হতে জানা যায় রবিবার গভীর রাতে হঠাৎ টাংকিটি ভূমি হতে কিছুটা উপরে উঠে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজের মান খারাপ করছে বলে এধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলেও স্থানীয়দের অনেকে ধারনা করছেন। তবে কি কারনে ট্যাংকিটি মাটির উপরে উঠে এসেছে তার সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের মেরাউপাড়ায় অবস্থিত ১ নং আবাসনের একটি পানির টাংকির এক তৃতীয়াংশ মাটির উপরে উঠে রয়েছে। পূর্ব-পশ্চিমমুখি টাংকির পূর্ব দিকে ৩ ফুট ও পশ্চিম প্রান্তের দিকে দেড় ফুট ভূমির উপরে উঠে থাকতে দেখা যায়। জানা যায়, সরকার পায়রা বন্দরের ভূমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের বসবাসের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এজন্য উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে একাধিক আবাসনের কাজ চলমান রয়েছে। দেশের স্বনামধন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এসব আবাসনের কাজ চলছে। ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেরাউপাড়ায় ৩ টি আবাসনের কাজ চলমান রয়েছে। ৩ টি আবাসনের কাজ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এরমধ্যে ১ নং আবাসনে ১৪৪ পরিবারের পানি সরবরাহের জন্য ৩০ ফুট দৈর্ঘ ২০ ফুট প্রস্থ ও ১০ ফুট গভীরতার দেড় লক্ষ লিটার পানি ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ট্যাংকি তৈরী করা হয়েছে। ট্যাংকিটি সম্পূর্ন কংক্রিট দিয়ে তৈরী করা হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে ট্যাংকির চারপাশে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বুদবুদের মাধ্যমে ট্যাংকিটি হঠাৎ পানির উপরে উঠে আসে বলে স্থানীয়সূত্রে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী আবাসনের শ্রমিক সোহাগ ফরাজী বলেন, রাত দেড়টার দিকে ট্যাংকির চারপাশের পানিতে বুদবুদ করতে থাকে। জানতে পেরে আমরা অনেকেই সেখানে যাই। পরে হঠাৎ করে ট্যাংকিটি মাটির উপরে উঠে আসে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কারো ধারনা মাটির নিচে জমে থাকা গ্যাসের কারনে হয়েছে, কেহ আবার নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ভেজাল ছিল বলে ধারনা করছে। তবে, এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজে যথেষ্ঠ স্বচ্ছতা নেই বলেই অধিকাংশ বাসিন্দারা মনে করছেন। স্থানীয়দের মতে, পায়রা বন্দরে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থদের বসবাসের জন্য সরকার এ আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যান্ত নিম্নমানের ইট, বালু, রড ও সিমেন্ট দিয়ে কোন মতে দায় সাড়ার চেষ্টা করছে। সরকার একটি ঘড় তৈরীর জন্য যে বাজেট দিয়েছে তার সিংহভাগই অসাধু ব্যবসায়ীদের পকেটে যাচ্ছে বলেও তারা মনে করছেন।

আবাসনের সার্ভেয়ার মো. শামীম জানান, হঠাৎ পানির ট্যাংকিটি মাটির উপরে উঠে আসায় আমরাও বিচলিত রয়েছি। কি কারনে এটি হয়েছে তা সঠিক তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। তবে ট্যাংকির নিচের পানির লেয়ার উপরে উঠে আসা, অতিরিক্ত গ্যাসের প্রেসার বা বালুর প্রেসারের কারনে এমনটি হয়ে থাকতে পারে বলে তারা ধারনা করছেন। ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস কোম্পানির লজেষ্টিক এডমিন অফিসার মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমরা পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা তদন্ত করে সঠিক কারন বের করবে বলেও তিনি জানান।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password