ময়মনসিংহে ঘুমন্ত মাকে গলা কেটে হত্যাকারী ছেলে কারাগারে ‘পাগল-অবশ’!

ময়মনসিংহে ঘুমন্ত মাকে গলা কেটে হত্যাকারী ছেলে কারাগারে ‘পাগল-অবশ’!

প্রকৃতির শাস্তি বড়ই নির্মম। দেশের আইনের পাশাপাশি প্রকৃতির শাস্তি পাচ্ছেন জমির লোভে ঘুমন্ত মাকে গলা কেটে হত্যাকারী এক ছেলে। কারাগারে সেই হত্যাকারী ছেলে এখন ‘পাগল’। ‘অবশ’ হয়ে গেছে তার দুটি পা। ‘পাগল ও অবশ’ অবস্থায় কারাগারে দিন কাটছে পাষণ্ড এ ছেলেটির।

অভিযুক্ত ছেলের নাম আবু তালেব। তার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলের কানুরামপুর কতুবপুর গ্রামে। গত আট বছর আগে জমির লোভে পড়ে মাকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হন আবু তালেব। এখন বিচারের তিনি কারাগারে রয়েছেন। 

মঙ্গলবার আবু তালেবকে আদালতে হাজির করলে মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি জানা যায়। এর আগে তাকে পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ফের কারাগারে আনা হয়। তার দুটি পা অবশ হয়ে গেছে।

এসব বিষয়ের সত্যতা জানিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আব্দুছ ছাত্তার (বর্তমানে ত্রিশাল থানায় কর্মরত) বলেন, আদালতে হাজিরার পর সিঁড়ি দিয়ে হামাগুড়ি করে নামার সময় দেখা হলে মাকে হত্যায় অভিযুক্ত ছেলে বলেছে, ‘স্যার ভালা আছুইন,আমার ফডোডা (ছবি) তুলুইন। পরে আমার এ দশা বেহেরে (সকল) দেহাইন যে।’

স্থানীয়রা জানান, ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউপির কানুরামপুর এলাকার কতুবপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেন ভুইয়ার স্ত্রী মোছাম্মৎ মঞ্জিলা বেগমের গলাকাটা মরদেহ বিছানার মশারির নিচে পাওয়া যায়। তখন ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ের মধ্যে বাড়িতে থাকা আবু তালেবকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

তারা জানান, মায়ের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধের কারণে এ ঘটনা ঘটাতে পারে আবু তালেব। এ অবস্থায় দুদিন পর পাশের এলাকা থেকে আবু তালেবকে আটকের পর মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে সে।

নিহতের বড় মেয়ে রাশিদা তখন জানিয়েছিলেন, জমির ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যে বিরোধসহ মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে। সম্প্রতি আবু তালেবের বিরুদ্ধে একটি মামলায় মা মঞ্জিলা বেগমকে স্বাক্ষী রাখে আরেক ছেলে আব্দুল কাইয়ুম। এ নিয়ে বৃদ্ধ মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া করতো আবু তালেব।

প্রতিবেশীরা জানান, দুই ছেলে ঢাকায় এবং মেয়েরা সবাই স্বামীর বাড়িতে থাকায় আবু তালেবকে নিয়ে বসবাস করতেন বৃদ্ধা মঞ্জিলা বেগম। ওই দিন সন্ধ্যায় তার হিস্যার জমি লিখে দেয়ার জন্য মাকে চাপ দেয় আবু তালেব। রাজি না হওয়ায় বসত ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুরসহ বৃদ্ধ মাকে লাঞ্চিত করে। পরে ভোরে বৃদ্ধা মঞ্জিলার গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ চৌকির ওপর পাওয়া যায়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password