যে কারনে বাপ ছেলের প্রতি রাতের অত্যাচার মেনে নিতে হয় জোসনা বেগমের

যে কারনে বাপ ছেলের প্রতি রাতের  অত্যাচার মেনে নিতে হয় জোসনা বেগমের
MostPlay

গভীর রাতের সেই ঘটনা। প্রতিদিনের মতই বাসার সবাই ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন সেদিনও। ঘুমিয়ে ছিলেন জোছনা বেগমও। কিন্তু হঠাৎ চমকে গেলেন জোছনা বেগম। লক্ষ্য  করলেন তার শরীরে একটি হাত নোংড়াভাবে স্পর্শ করছে । 

হাতটি ধীরে ধীরে ছুঁয়ে যাচ্ছে তার স্পর্শকাতর অঙ্গেও। চোখ খুলে তাকাতেই আঁতকে উঠেন। দেশে থাকাকালীনও এরকম বিপদে পড়তে হয়নি তাকে। বিদেশের মাটিতে এসে এ কোন ভয়ঙ্কর প্রাণীর শিকার হতে হচ্ছে জোসনা বেগমকে।

যে বাড়িতে কাজ করেন সেই বাড়ির কর্তাই শিকারী। তখন তার  আর কিইবা করার আছে। কিছু বলার আগেই জোছনাকে ঝাপটে ধরেন গৃহকর্তা। শরীরের সব শক্তি দিয়ে বাধা দেয় জোসনা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যর্থ হন। ওই রাতেই ধর্ষণের শিকার হতে হয় তাকে। ঘটনাটি সৌদি আরবের রিয়াদে ঘটেছে। এক আরব ব্যবসায়ীর বাসায় কাজ করার কারনে এ ঘটনার শিকার হন তিনি।

গৃহকর্তার ধর্ষণের শিকার হয়ে জোসনা বেগম পরের দিন বিষয়টি গৃহকর্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানান। সৌদি আসার আগে একটু আধটু আরবি ভাষা শিখেছিলেন তিনি। তা দিয়েই বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেন। সব জেনে উল্টো ধমক দেয় গৃহকর্ত্রী। 

জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য। তারপর থেকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও গৃহকর্তার যৌন নির্যাতন মেনে নিতে হয় জোসনাকে। 

অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন জোসনা। বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবা, ছোট দুই বোন ও এক ভাই আছে তা। অভাব যেনো পিছু ছাড়ে না কোন মতে। বড় সন্তান হিসেবে কিছু একটা করার ইচ্ছা থেকেই বিদেশে আসা তার। 

প্রতিবেশী রফিক মিয়ার মাধ্যমেই খোঁজ পেয়েছিলেন সৌদিতে নারী শ্রমিক নিচ্ছে। রফিককে এজন্য অর্ধলক্ষ টাকা দিতে হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত জেনেছেন নারী শ্রমিকদের জন্য ভিসা ফ্রি দেওয়া হয়। ঋণ করেই টাকাগুলো দিতে হয়েছিলো তাকে। বিদেশে আসতে বাধা দিয়েছিলেন মা-বাবা। এসব বাধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে জোছনা ছুটে চলে প্রবাসে। এখানে আসার তৃতীয় দিনে এই ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। যে কক্ষে জোসনাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে সেটি একটি কিচেন সংলগ্ন দরজাহীন একটি ঘর মাত্র। এই সুযোগে জোসনার কাছে হামলা করে গৃহকর্তা ও তার ছেলে।

প্রথম বার ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকে রাত বাড়লেই আগমন ঘটে তাদের। প্রায় প্রতিটি রাত এভাবেই অতিবাহিত করতে হয় তাকে। একই বাসায় বাপ ও ছেলে দুজনে মিলেই তাকে প্রতিনিয়ত ভোগ করতে থাকে প্রতি রাতে।

এমনি এক রাতে গৃহকর্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া মেজো ছেলে ডাকাতের মতো দুটি নোংড়া হাত দিয়ে অত্যাচার করে জোসনার ঘুমন্ত শরীরে। পিতার মতোই এই যুবক তাকে ঝাপটে ধরে। সেই রাতে সাহস করে চিৎকার করেন জোসনা বেগম।  

চিৎকার শুনে এগিয়ে যান গৃহকর্ত্রী। জোছনার চোখে জল। কাঁদতে কাঁদতে জানান তার সঙ্গে কী ঘটেছে। এবারও অভিন্ন রূপে গৃহকর্ত্রী। নিজ ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারণে উল্টো ধমক দেন জোছনাকে। 

পরের রাতে আবারও জোছনার কক্ষে যান ভার্সিটি পড়ুয়া ওই যুবক। জোছনা এবারও বাধা দেন। তীব্র বাধা। এবার যুবক তাকে মারধর করেন। বাধ্য হয়েই মেনে নেন বাপ-ছেলের যৌন নির্যাতন। এভাবে কয়েক মাস।

এমন পরিস্থিতিতে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জোসনা বেগম। এক রাতে ওই বাসা থেকে পালিয়ে যান তিনি। 

বাংলাদেশী শ্রমিকদের অনেক সহযোগিতায় জোসনা বেগম পৌঁছে যান সেইফ হোমে। তারপর দেশে ফিরে আসেন এই নারী। বর্তমানে তিনি পোশাক-শ্রমিক হিসেবে ঢাকার মিরপুরে একটি গার্মেন্টস কারখানায় কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password