গাজীপুর মহানগরীর নাওজোর এলাকায় এক বিধবা গৃহকত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ ও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে বাড়ির এক ভাড়াটের বিরুদ্ধে ভিক্টিম বাদি হয়ে রোববার সকালে বাসন থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ রোববার দুপুরে ওই ভাড়াটেকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে ভাড়াটে গ্রেপ্তার(৩০), দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার ঘোষপাড়া সাতোর গ্রামের সুকুমার ঘোষের ছেলে।

বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান মামলার বরাত দিয়ে জানান, দুই বছর আগে ভিক্টিমের স্বামী মারা যান। ভিক্টিম তাদের তিন কণ্যাকে নিয়ে মহনগরীর স্বামী গৃহেই বসবাস করছেন। তার স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়ি ভাড়া, দুইটি ট্রাক ও ইটভাটার আয় থেকে মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার খরচ চালান। গত ২৮জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বাসার তিনতলার ভাড়াটে নয়ন ভাড়া দেয়ার কথা বলে দরজায় টোকা দিলে ভিক্টিম দরজা খুলে দেয় গৃহকত্রী।এসময় তার মেয়েরা ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে এবং তাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে নয়ন ধর্ষণের ঘটনা তার মোবাইলেও ধারণ করে। পরে ঘটনাটি কারো কাছে বললে তাকে ও মেয়েকে এসিডে পুড়ে মারার হুমকি দিয়ে চলে যায় নয়ন।

পরবর্তীতে ধর্ষণের ভিডিওটি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেয়ার হুমকি দিয়ে গৃহকর্ত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে এবং বিভিন্ন পরিমানে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভিক্টিম নয়নের সঙ্গে মিমাংসা করতে চাইলে নয়ন মোবাইল থেকে ধর্ষণ ভিডিওটি মুছে দেয়ার শর্তে ২০লাখ টাকা দাবি করে এবং এলাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়ার প্রস্তাব মেনে নেয়। নয়নের প্রস্তাবে রাজি হয়ে ভিক্টিম স্বামীর রেখে যাওয়া দুইটি ট্রাক বিক্রি করে ২০লাখ টাকা নয়নকে দেয়।

পরে নয়ন কিছু দিনের জন্য গ্রামের বাড়ি চলে গিয়ে আবার গাজীপুরের নাওজোর এলাকায় ফিরে আসে এবং ভিক্টিমের কাছে আবারও ৫০লাখ টাকা দাবি করে। তা না হলে তাদের সকলকে এসিড ছুড়ে মারার হুমকি দেয়। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে নয়ন ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে অবারও একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি নিয়ে স্বজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে ভিক্টিম রোববার সকালে বাসন থানায় নয়নের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। রোববার দুপুরে নাওজোর এলাকা থেকে নয়নকে গ্রেপ্তার করে গাজীপর আদালতের মাধ্যমে হাজতে পাঠানো হয়েছে।