মাগুরার সন্দেশ আর প্যাড়া সন্দেশ অনেক জায়গা থেকেই একটু ভিন্ন স্বাদের। প্যাড়াটা আগের দিনে শীতের গুড় উঠলে বেশী তৈরি হতো। এখন যেহেতু সব কিছু সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে,তাই সারা বছরই পাওয়া যায়।
মাগুরার মিষ্টি আগাগোড়াই খেতে সুস্বাদু। এসব মিষ্টির ভেতরে যত রকম মিষ্টি থাক না কেন, চমচম আর কালোজামের একটা আলাদা কদর রয়েই গিয়েছে। গ্রাহকদের আকর্ষণ একইরকম ভাবে ধরে রেখেছে।
মাগুরার দই এর স্বাদও অতুলনীয়। বিশেষ করে খামার পাড়ার দই। খামারপাড়ার দই মাগুরাসহ আশেপাশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন দিন ধরে নিজস্ব ঐতিহ্য বহন করে যাচ্ছে। কেবলমাত্র ওসব এলাকাই নয়, রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশেই এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিয়েসহ অন্যান্য যে কোন অনুষ্ঠানে এই দই এক অনন্য তালিকায় স্থান পায়। রাধানগর আর বিনোদপুরের মিষ্টিও ভালো।
মাগুরার জনপ্রিয় মিষ্টির তালিকাতে আরো আছে, বিখ্যাত ক্ষীরের সন্দেশ, লাল মোহন,পানতোয়া, রসগোল্লা, রস মালাই,ছানার জিলাপি- এমন আরো অনেক কিছু। এর ভেতরে ক্ষীরের সন্দেশটা বেশ জনপ্রিয় সবার কাছে। বিদেশেও এই মিষ্টি সরবরাহ করা হয়। মাগুরার মিষ্টির এমন মন ভোলানো স্বাদ হওয়ার কারণ খাঁটি দুধ এবং টাটকা ছানা। মাগুরার সন্দেশ বা কাঁচাগোল্লা কে এক নম্বরেই মনে হয় সব সময়। এই খাঁটি দুধ আর টাটকা ছানার কারণে এটা যেমন চেহারা তেমন মোলায়েম এবং স্বাদ যে কোন জায়গার থেকে ভিন্ন। সাদা মিহি ঝুরি এই কাঁচাগোল্লা গরম রুটি, পরোটা দিয়ে খেতে অতুলনীয়।
কৃষিকর্মের এলাকা বলে এ অঞ্চলে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষের কোন অভাব নেই। তাই খাঁটি দুধের চালান পেতে দোকান গুলোর কোন অসুবিধা হয় না। এ জন্যই যুগ যুগ ধরে সুস্বাদু মিষ্টি তৈরিতে মাগুরা বেশ উপরের দিকে অবস্থান করে আসছে সেই সুদূর অতীত থেকেই। এ ছাড়া ময়রারা বংশ পরম্পরায় এ পেশায় জড়িত আছে বলে, ঐতিহ্য ধরে রাখতে তাদের জন্য খুব একটা কঠিন হয় না। এক সময় বৈশাখী হোটেল ছিল নামকরা।
এরপরে চলন্তিকা, আরো ছড়িয়ে আছে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কিছু দোকান। নদীর পাড়ে সুগন্ধার নাম এখন মানুষের মুখে মুখে। যে কথা বলা হয়নি, মাগুরার বিভিন্ন মেলা বা আড়ং-এর মিষ্টির মজাও কিন্ত আলাদা। বাতাসা, দানাদার, কদমা, মটকা, ছাঁচ মিষ্টি এখনও পাওয়া যায় হাটবাজার আর আড়ং-এ।
মাগুরা আমাদের প্রিয় জেলা। এ জেলার ঐতিহ্যবাহী যে কোন কিছুতেই আমাদের ভাল লাগা, আমাদের অহংকার। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই মিষ্টির চাহিদা দিনে দিনে আরো বেশী ব্যাপকতা লাভ করুক, এ তো আমাদের সকল মাগুরা বাসীর কাম্য।
মন্তব্যসমূহ (১) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন
Md Shahadat Reply
3 years agoধন্যবাদ