হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল থেকে থানায় হামলা চালায়

হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল থেকে থানায় হামলা চালায়

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের কর্মী ও হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল থেকে থানায় হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চারজন মারা যায়। এদের মধ্যে তিনজন ছাত্র ও একজন পথচারী।

নিহতদের মধ্যে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- মেরাজুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া অপরজন হলেন পথচারী। তার নাম পরিচয় জানা যায়নি। 

এ ছাড়া মাদ্রাসাছাত্ররা চার পুলিশকে অবরুদ্ধ করে। মাদ্রাসায় নিয়ে তাদের মারধর করা হয়। তাদের মধ্যে এএসপি (শিক্ষানবীশ) ফারাবী ও এসআই গুরুতর আহত হলে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। অপর দুই পুলিশ কর্মকর্তা এখনো অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। এ সময় পুলিশের একটি পিস্তল ছিনিয়ে নেয় বিক্ষোভকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মী ও মাদ্রাসাছাত্ররা মিছিল নিয়ে হাটহাজারী থানা,  দিকে এগুতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় হেফাজত অনুসারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করে পুলিশ। 

হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, হেফাজত অনুসারীরা মিছিল করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা হাটহাজারী থানায় প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এছাড়া তারা ভূমি অফিস, ডাকবাংলোতেও হামলা চালায় হেফাজত কর্মীরা। এ সময় রাস্তায় পুলিশ অবস্থান নিলে হাটহাটজারী মাদ্রাসা থেকে আগত অনুসারীরা নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শিলাব্রত বড়ুয়া সাংবাদিক কে  বলেন, হাটহাজারীতে সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদের অনেককে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তবে তাদের পরিচয় জানাতে পারেননি তিনি।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌলা রেজা সাংবাদিক কে বলেন, মিছিলকারীরা হাটহাজারী থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকজন আহত হয়।

এদিকে চার ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে বেলা আড়াইটা থেকে মাদ্রাসার সামনে ছাত্ররা অবরোধ করে। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী সাংবাদিক কে জানান, জুমার নামাজের পর হেফাজত নেতাকর্মীরা এ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই হেফাজত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। পরে পুলিশের সঙ্গে হেফাজত নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে  ঢাকার মতিঝিলে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় কয়েকজনকে আটক করলেও পরে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password