ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের সামনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এক প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় উপজেলা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষক সমিতির প্যাডে ১৬ই ডিসেম্বর এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। জানা যায়, মহান বিজয় দিবসে সকলের সাথে ফুল দিতে যায় উপজেলা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে একই নামে দুটি সংগঠন। উপজেলা শিক্ষক সমিতির লিঠু-জাহিদ প্যানেল ফুল দেওয়া শেষ হলে আরেকটি সংগঠন আখতারুজ্জামান-রবিউল প্যানেলের ফুল দেওয়ার সময় উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সালথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ জাহিদুর রহমান ও সিংহপ্রতাপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ সাহেবুল ইসলাম সঞ্চালক কে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ ও লাঞ্চিত করে।
এরপর বিভিন্ন হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। আরও জানা যায়, শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় মাইকে সঞ্চালকের কাজ করছিলেন, উপজেলার কামাইদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানাধীন পুরাপাড়া ইউনিয়নের পুরাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেক মিয়ার ছেলে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতার মিজানুর রহমানকে বিজয় দিবসে সকল অনুষ্ঠানে সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব দেন। লাঞ্চিত কামাইদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ইএনও স্যার আমাকে সঞ্চালক হিসেবে অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে। বিজয়ের মাসে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে লাঞ্চিত ঘটনা মেনে নিতে পারছি না।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছি তবে কয়েকদিন পার হয়ে গেলেও আমি এই ঘটনার কোন সুরহা পেলাম না। এই বিষয়ে শিক্ষক জাহিদুর রহমান বলেন, এখানে লাঞ্চিত হওয়ার কোন ঘটনা ঘটে নাই, শুধু একটু উচ্চ বাচ্চ হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন থেকে যে তালিকা দিয়েছে তিনি তার বাইরে সে নাম ঘোষণা করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, মোঃ মিজানুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ছাড়াও একজন আদর্শ শিক্ষক, কোন কারন ছাড়া তার সাথে এমন আচরণ করা জাহিদুর রহমানের উচিত হয়নি। আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে ভালবাসা ও শ্রদ্ধা মনে হয় কমে যাচ্ছে। এই ঘটনার যথাযথ বিচার চাই।
এই বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক জান-ই-মারজানা শারমিন বলেন, বিজয় দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে মিজানুর রহমান দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার সাথে যে আচরণ করা হয়েছে, তা জঘন্যতম। আমরা আমরা এর বিচার চাই।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মোঃ মাহবুব হোসেন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা খুব দ্রুতই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিব, শিক্ষক জাহিদুর রহমানের অনুসারীরা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ফেসবুকে যে কটুক্তি করছে তারও নিন্দা জানাই, আশা করছি মান্যবর ইউএনও স্যার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের পাশে থাকবেন। সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতার বলেন, এই বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, এই বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন