একজনকে গুলি করে হত্যা, আরেকজনকে তুলে নিয়ে গেছে

একজনকে গুলি করে হত্যা, আরেকজনকে তুলে নিয়ে গেছে

রাজশাহীর বাঘার পদ্মার চরাঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৪ জন গুলিবিদ্ধের ২৮ দিন পর একই এলাকায় ইব্রাহিম নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একই সাথে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে মোশারফ নামে অপর এক যুবককে। বুধবার (২৪ মার্চ) রাতে চরাঞ্চলের চৌমাদিয়া বাজারে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিমের পিতার নাম হাবি দেওয়ান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার চৌমাদিয়া বাজারে এক চায়ের দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিল নিহত ইব্রাহিম এবং নিখোঁজ মোশারফ হোসেন। এ সময় একই এলাকার জিয়া এবং আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল সেখানে এসে প্রথমে ইব্রাহিমকে গুলি করে, পরে তার পায়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। একই সাথে মোশারফ নামের অপর যুবককে তুলে নিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, বাঘা থানার চৌমাদিয়া চরাঞ্চলে দিদার ব্যাপারীর গম ক্ষেতের পার্শ্বে মজনু দর্জির কলার বাগান রয়েছে। উক্ত বাগানে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে দিদার ব্যাপারী তার লোকজন নিয়ে জমির আগাছা দমনের জন্য আগুন দেয়। এতে পার্শ্ববর্তী মজনু ব্যাপারীর কলার বাগানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফলে কলার বাগানে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় উভয়ের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার এক পর্যায় সন্ধ্যে ৭ টার সময় চৌমাদিয়া বাজারে দিদার ব্যাপারীকে চড়-থাপ্পড় মারে মজনু দর্জি।

এর জের ধরে ২৮ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ ঘটিকার সময় কলার বাগান মালিক মজনু দর্জি বাগান পরিচর্চা করতে গেলে গম ক্ষেত্রের মালিক দিদার ব্যাপারী তার লোকজন নিয়ে অতর্কিত মাজনুর ওপরে হামলা চালায়। এ খবর পেয়ে মজনুর লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে তাদের ওপর গুলি বর্ষণ করা হয়। এতে লিটন (২৯), আব্দুর রাজ্জাক (৩৩), মরিয়ম বেগম (৪৫) ও দুলাল ব্যাপরী গুলিবিদ্ধ হয়। একই সাথে হাসুয়ার কোপে আহত হন ইদ্রিস আলী (৩০), ইয়ার আলী দর্জি (৪২) এবং ইব্রাহিম (২৮)।

এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় বাঘা থানায় ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন আহত ইয়ার আলীর বড়ভাই আব্দুর রহমান মেম্বার। এ মামলায় পুলিশ আব্দুর রশিদ নামে একজন আসামির বাড়ী থেকে ১২ বোতল ফেনসিডিল এবং বিজিবি পরিহিত এক সেট পোশাক উদ্ধারসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চরাঞ্চলের চৌমাদিয়া গ্রামের হাকিম ব্যাপারীর ছেলে আলাউদ্দিন (২৩) আব্দুল জলিল ব্যাপারীর ছেলে আসাদ ব্যাপারী (৪০) ও রশিদ আলীর স্ত্রী রুবি আক্তার (২৭)।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) নিহতের ভাই সলিমান বাদী হয়ে বাঘা থানা মামলা করেছেন।

বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল বারী বলেন, চৌমাদিয়া চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির পাশে বসে ছিলেন জিয়া ইব্রাহিম ও মোশারফ। সেখানে তাদের ওপর হামলা হয়। নিহতের ভাই বাদী হয়ে একজনকে খুন অপর জনকে গুমের বিষয়ে মামলা করেছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password