টগবগে যুবক সুমন। কায়িক পরিশ্রম করে চলছিল তার সংসার। মা, বাবা আর ভাই বোনের ভরণ পোষণে একমাত্র উপাজনক্ষম ছিলেন তিনি। চলছিল বিয়ের আয়োজন। বিয়ে করে সংসারটাকে আরো নতুন করে সাজাবেন। দেখতেন রঙিন স্বপ্ন। এর মধ্যে ঘটে গেল দুর্ঘটনা। এতে হারালেন দু’ পা। সুমনের জীবন থেকে নিভে গেল স্বপ্নগুলো। দুর্বিসহ ওঠে জীবন। এখন বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছেন। চোখে মুখে শুধু হতাশা।
সুমনের পঙ্গুত্ব জীবন যেন আর চলছেনা। মা, বাবা আর ভাই বোনের ভরণ পোষণ কে করবে? তার চিকিৎসার খরচ আসবে কিভাবে? এমনি নানা প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে সুমনের চোখে মুখে। হতদরিদ্র পরিবারের এই যুবক শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ছনকান্দা গ্রামের রিকশাচালক আহালু মিয়ার ছেলে।
টগবগে যুবক সুমন। কায়িক পরিশ্রম করে চলছিল তার সংসার। মা, বাবা আর ভাই বোনের ভরণ পোষণে একমাত্র উপাজনক্ষম ছিলেন তিনি। চলছিল বিয়ের আয়োজন। বিয়ে করে সংসারটাকে আরো নতুন করে সাজাবেন। দেখতেন রঙিন স্বপ্ন। এর মধ্যে ঘটে গেল দুর্ঘটনা। এতে হারালেন দু’ পা।
সুমনের জীবন থেকে নিভে গেল স্বপ্নগুলো। দুর্বিসহ ওঠে জীবন। এখন বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছেন। চোখে মুখে শুধু হতাশা। সুমনের পঙ্গুত্ব জীবন যেন আর চলছেনা। মা, বাবা আর ভাই বোনের ভরণ পোষণ কে করবে? তার চিকিৎসার খরচ আসবে কিভাবে? এমনি নানা প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে সুমনের চোখে মুখে। হতদরিদ্র পরিবারের এই যুবক শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ছনকান্দা গ্রামের রিকশাচালক আহালু মিয়ার ছেলে। রবিবার ( ১৪ মার্চ) সুমনের বাড়িতে গেলে ফুটে ওঠে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা।
সুমনের বয়স ২২ বছর। তার বাবা আহালু মিয়া রিকশাচালক। মা আঙ্গুরি বেগম গৃহিনী। তারা তিন ভাই। তিন বোন। ভাইদের মধ্যে সুমন সবার বড়। এ সংসারের হাল ধরতে সুমন ছোট থেকেই প্রাইমারি স্কুল ছেড়ে কাজে নেমে পড়েন। রাইস মিলের শ্রমিকের কাজ করে সংসারের হাল ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনাকালে বন্ধ হয় রাইস মিল। বেকার হয়ে পড়েন সুমন। কিছুদিন বেকার থাকার পর কাজ নেন একটি ট্রলির হেলপারের। গত ১৪ জানুয়ারি ধান বোঝাই ট্রলি নিয়ে শ্রীবরদী হতে যাচ্ছিল শেরপুরে। ঝুলছিল ট্রলির চালকের পাশে। এ সময় কুরুয়া বাজারের যাওয়ার আগেই চলন্ত ট্রলি থেকে ছিটকে পড়েন সুমন। ট্রলির চাকার নিচে পড়ে তার দু’পা। এতে ক্ষত বিক্ষত হয় পায়ের হাড়গুলো। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় জেলা সদর হাসপাতালে। এখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে রেফার করেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তাররা বাধ্য হয়ে তার দু’পা কেটে ফেলেন।
কোনো দিন তিনি আর হাঁটতে পারবেন না। হুইল চেয়ারে বসে বয়ে বেড়াতে হবে পঙ্গুত্ব জীবন। সুমন জানান, ১৪ মার্চ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার তার আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি হুইল চেয়ার দিয়েছেন। অসহায় সুমন বলেন, আমার মেলা স্বপ্ন ছিল। ছোট ভাই বোনকে পড়ালেখা করামু। বোন গুলো বিয়ে দিমু। নিজের সংসারটাও সুন্দর করে সাজামু। অহন সব শেষ। নিজেই চলতে পারি না। সংসার চালামু ক্যামনে?
তার বাবা আহালু মিয়া বলেন, আমি ছেলের চিকিৎসা আর সংসার চালানো লাইগা ঢাকায় যামু রিকশা চালাতে। কষ্ট কইরা হলেও তাকে সুস্থ কইরা তুলমো। আমি চাই না যাতে আমার ছেলে মানষের কাছে হাত পাতে। তিনি জানান, কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাকে একটি মুদি দোকান করে দিলে হয়তো দিন চলার একটা ব্যবস্থা হতো।
তার মা আঙ্গুরি বেগম বলেন, পোলাডারে নিয়া মেলা আশা ছিল। সব শেষ। কেউ যদি পোলাডারে সহযোগিতা করতো তা হলে ব্যবসা কইরা কোনো মতো চলতে পারতো। হয়তো কেউ আসবে সুমনের সহযোগিতায়। দু’পা ফিরে না পেলেও ফিরে পাবে তার সংসারের স্বচ্ছলতা। ভুলে থাকতে পারবে পঙ্গুত্ব জীবন। এমনটাই প্রত্যাশা ওই পরিবারসহ সকলের।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন