দেশকে মাদকমুক্ত করতে আসছে পরীক্ষামূলক প্রকল্প

দেশকে মাদকমুক্ত করতে আসছে পরীক্ষামূলক প্রকল্প

দেশকে মাদকমুক্ত করতে চায় সরকার। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম ও দিনাজপুর অঞ্চলকে মাদকমুক্ত করতে নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষামূলক প্রকল্প। মাদক প্রতিরোধে উপজেলা কমিটিকে আরও সক্রিয় করা হচ্ছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) মনিটর করতে বলেছে সরকার। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্টও করা হবে।

বুধবার সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বৈঠকে কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল,

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. শহিদুজ্জামানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও দিনাজপুর জেলাকে মাদকমুক্ত করার প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। কীভাবে এটা বাস্তবায়ন করা হবে, সেজন্য সুরক্ষা সচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কার্যপরিধি, কার্যপদ্ধতি নিশ্চিত করে ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার মিলে একটি ইউনিট এবং দিনাজপুর অঞ্চলে আরেকটি ইউনিট মিলে পরীক্ষামূলক প্রকল্প নেওয়া হবে। মাদকমুক্ত ঘোষণার জন্য যা যা প্রয়োজন সেগুলোর জন্য তারা পদক্ষেপ নেবেন। পরে সারাদেশকে এর আওতায় আনা হবে। প্রকল্পের আওতায় মাদকসেবী, মাদক বিক্রেতা, আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতাদের চিহ্নিত করা হবে। চিহ্নিত করার পর তা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই হবে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

এক প্রশ্নের জবাবে কমিটির সভাপতি বলেন, সবকিছু মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। রোহিঙ্গাদের অপরাধ দমনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর এবং যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে এনেছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সরকার তার প্রায় ৯০ ভাগ শেষ করেছে। আগামী মে মাসের মধ্যে অত্যাধুনিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পন্ন হবে।

ডোপ টেস্ট নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট করা হবে। ডোপ টেস্টের নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও ডোপ টেস্ট করা হবে। এ জন্য সচেতনতা তৈরি করতে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত সরকারি চাকরিজীবীদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখনই এটা ব্যাপকভাবে করা হচ্ছে না। অভিযোগ পেলে কর্মরতদের টেস্ট করা হবে। তবে গড়ে সবারটা করা হবে না।

তিনি বলেন, সভায় দেশে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে নজরদারি করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিটিআরসি এ বিষয়ে মনিটর করবে। তবে নিয়ন্ত্রণ নয়, আইনের আওতায় থাকা উচিত। অবাধ তথ্য প্রবাহের কারণে জাতীয়ভাবে সমাজ বিভ্রান্তিতে পড়ে। মানবতাবিরোধী, সমাজবিরোধী বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ হওয়া জরুরি। বিরোধী দল রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। সরকার সেখানে কাউকে নিয়ন্ত্রণ করতে যাবে না।

তিনি জানান, ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার বাংলাদেশে অফিস খোলা অথবা অন্তত একজন প্রতিনিধি নিয়োগের ব্যবস্থা করবে সরকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে কোনো অভিযোগ উঠলে সরকার যাতে তাদের জানাতে পারে কিংবা ব্যবস্থা নিতে পারে সেজন্য এ ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে। সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password