ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ নকল চাবি বানিয়ে গাড়ি চুরির পর কম দামে বিক্রি, গ্রেফতার ৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ নকল চাবি বানিয়ে গাড়ি চুরির পর কম দামে বিক্রি, গ্রেফতার ৪
MostPlay

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলায় অভিযান চালিয়ে ৮টি চোরাই গাড়িসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম। রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে এই টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আশারাফুল ইসলাম সাংবাদিককে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নূরুল হক, আব্দুল আলিম ওরফে ইমন, মো. হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান ও এ এইচ রুবেল। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮টি চোরাই প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সম্প্রতি রাজধানীর কাফরুল, গুলশান থানাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটে। রাজধানীর মিরপুর বিআরটিএ অফিসের রাস্তার বিপরীত পাশে থাকা একটি প্রাইভেটকার চুরির ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারি কাফরুল থানায় মামলা হয়। পরবর্তী সময়ে গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম উক্ত মামলার তদন্ত শুরু করে।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আশারাফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্র। এই চক্রের সদস্যদের সনাক্ত করা হয়। গত ২৮ জানুয়ারি প্রথমে চোরাই প্রাইভেটকারসহ নূরুল হককে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার নূরুল হকের দেয়া তথ্যমতে গত ১২ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানা এলাকা থেকে একটি চোরাই প্রাইভেটকার ও একটি মাইক্রোবাসসহ আব্দুল আলিম ওরফে ইমনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৬ মার্চ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানা এলাকা থেকে মো. হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান ও এ এইচ রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।’

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কৌশল সম্পর্কে সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আশারাফুল ইসলাম বলেন, ‘এ চক্রের সদস্যরা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গাড়ি চুরির সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এ চক্রের একটি গ্রুপ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টার্গেট গাড়ি খুঁজতে থাকেন। টার্গেটকৃত গাড়ি পেলে সময় ও সুযোগ বুঝে কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ছুটে যায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, পূর্বাচল বা কাচঁপুর ব্রিজের দিকে। সামনে ও পেছনে বাইক বা অন্যকোনো গাড়িতে থাকে এ চক্রের বাকি সদস্যরা।’

তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে তাদের দক্ষ ড্রাইভার গাড়ি পৌঁছে দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ বা মৌলভীবাজারের চোরাই গাড়ি বিক্রির সিন্ডিকেটের কাছে। সেখান থেকে অন্য ড্রাইভার দিয়ে গাড়িটি চলে যায় সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায়। বিআরটিএ’র সিল-স্বাক্ষর জাল করে গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি করা হয়। মূল মালিকের নামের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয় নকল দলিল অথবা আদালতের স্বাক্ষর সম্বলিত নিলামের নকল কাগজপত্র।’

তিনি আরও বলেন, ‘সহজ সরল লোকদের ভুলিয়ে ভালিয়ে তাদের কাছে অনেকটা কম মূল্যে গাড়িটি বিক্রি করে দেন তারা। এ চক্রের সদস্যরা কিছু কিছু গাড়ি দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা বহন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের চোরাকারবার পরিচালনা করে গড়ে তোলে অপরাধের বিশাল সম্রাজ্য।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password