নাগরনো-কারাবাখের কবরস্থানে ফুটে উঠেছে আর্মেনিয়ার ধ্বংসযজ্ঞ

নাগরনো-কারাবাখের কবরস্থানে ফুটে উঠেছে আর্মেনিয়ার ধ্বংসযজ্ঞ
MostPlay

দখলদার আর্মেনিয়ার ধ্বংসযজ্ঞ ফুটে উঠেছে নাগরনো-কারাবাখের কবরস্থানগুলোতে। যুদ্ধের পর সেখানে ফিরে যাওয়া আজারবাইজানিরা তাদের প্রিয়জনদের কবরগুলোর এমন দশা দেখে হচ্ছেন মর্মাহত। আজারবাইজানের বাহিনী দ্বারা অঞ্চলটি স্বাধীনতা লাভের পর সেখানকার বাস্তুচ্যুত আজারবাইজানিরা ফিরে যাচ্ছেন তাদের আদি বাসস্থানে। তখনই কবরস্থানের এ ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়টি সামনে আসে।

অনেক কবরস্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে না, অনেকে তাদের প্রিয়জনের কবরটি খুঁজে পাচ্ছেন না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় নাগরনো-কারাবাখের প্রধান শহরগুলোর অন্যতম জাব্রাইলের কথা। সেখানকার কোনো কবরস্থানেরই বর্তমানে অস্তিত্ব নেই। শহরটির কিছু কবরস্থান খুঁড়ে ফেলা হয়েছে, যেখানে অনেক মৃতদেহের হাড়গোড় বের হয়ে থাকতে দেখা যায়।

তুর্কি সংবাদসংস্থা আনাদোলু এজেন্সির সাথে এ বিষয়ে আলাপকালে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্সিয়াল সহায়তাকর্মী হিকমেত হাজিয়েভ বলেছেন, গত ৩০ বছরের দখলদারিত্বের সময়ে কবরস্থানগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

‘কবরস্থানগুলোর বিরুদ্ধে তাদের এ যুদ্ধ, তাদের ধ্বংসযজ্ঞ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এটা এমন যে, তারা মৃতদের উপর প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করেছে। এটা ধ্বংসযজ্ঞের মারাত্মক হিংসাত্মক একটা উপায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই দেখা উচিত বিগত বছরগুলোতে আর্মেনিয়া কেমন বর্বরতা চালিয়েছে,’ বলছিলেন হাজিয়েভ।

আর্মেনিয়া ১৯৯১ সালে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত নাগারনো-কারাবাখ ও সংলগ্ন অপর সাতটি অঞ্চল দখল করে নেয়ার পর থেকে সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের দুই অংশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে।

বাকু সাম্প্রতিক যুদ্ধে বেশকিছু কৌশলগত শহর, জনপদ এবং তিন শ’র মতো বসতি ও গ্রাম আর্মেনিয়ার কাছ থেকে স্বাধীন করেছে। এর আগে প্রায় ২০ শতাংশ আজারবাইনি অঞ্চল প্রায় তিন দশক ধরে আর্মেনিয়ার অবৈধ দখলে ছিল।

সপ্তাহ ধরে তুমুল লড়াইয়ের পর মস্কোর মধ্যস্থতায় ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর একটি শান্তিচুক্তিতে উপনীত হয় সাবেক সোভিয়েত এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। চুক্তি করা হয় আর্মেনিয়া অনেকগুলো অঞ্চল বাকুর কাছে হস্তান্তর করবে। এর পর থেকেই উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে করে আসছে।

নাগরনো-কারাবাখে গত ৩০ বছরের দখলদারিত্বের সময় আর্মেনিয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এমন অভিযোগ এনে গত মাসে ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ হিউম্যান রাইটসে (ইসিটিএইচআর) মামলা করেছে আজারবাইজান। অভিযোগপত্রে আজারবাইজান উল্লেখ করেছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ১০১ জন আজারবাইজানি বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে ২৮ জন নারী ও ১২টি শিশু। এছাড়া আহত করা হয়েছে ৪২৩ জনকে, যার মধ্যে রয়েছে ১০৪ জন নারী ও ৫১টি শিশু। ধ্বংস করা হয়েছে ৯ হাজার ২৯৪টি বাড়ি।

সূত্র : ডেইলি সাবাহ

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password