ঢাকা বিভাগের মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার শেখপুর বাজারে ৪ নং ওয়ার্ড বাঁশকান্দি ইউনিয়নের যুব সমাজের উদ্দ্যোগে ১০ দিন ব্যাপী আনন্দ মেলার আয়োজন করা হয়।
শেখপুর বাজারের আনন্দ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান খোকন বয়াতি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাজিতপুর হাজেরা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাশার মিয়া, সভাপতি বাঁশকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নূর মোহাম্মদ মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক বাঁশকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাইফুল আলম রিপন মাতুব্বর,কার্য নির্বাহী সদস্য শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগ শাহ্জাহান মোল্লা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জীম মাতুব্বর এবং সার্বিক সহযোগিতায় বাঁশকান্দি ইউনিয়ন শাখার সভাপতি বাংলাদেশ যুবলীগ গোলাম মাওলা, সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরকার , সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জুবায়ের কাজী। মেলায় আশেপাশের বাঁশকান্দি,বহেরাতলা ও ধুরাইল ইউনিয়নের গ্রামবাসীরা পরিবার সজন নিয়ে অবসর সময় কাটাতে ও বিনোদনের জন্য মেলায় ঘুরতে আসেন।
বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ২৫ টি গ্রাম, বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের ২৪ টি গ্রাম ও ধুরাইল ইউনিয়নের ১০ টি গ্রামের গ্রামবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে মেলাটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠে।মেলায় ছোটো বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০ টির বেশি দোকান রয়েছে। দোকান গুলোর মধ্যে বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী, মুখরোচক খবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন তৌজসপত্র ইত্যাদি পন্য সামগ্রীর দোকান রয়েছে ।
বিনোদনের জন্য রয়েছে নাগর দোলা,দোল নৌকা, চরকি ইত্যাদি। দিনের বেলায় মেলায় দর্শকদের উপস্থিত কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকাল থেকে দর্শকের উপস্থিতি বাড়তে থাকে এই জন সমাগম থাকে মধ্য রাত পর্যন্ত। মেলা হল যখন একটি সামাজিক, বাণিজ্যিক বা অন্যান্য কারণে একটি স্থানে অনেক মানুষ একত্রিত হয়। মেলা শব্দটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনে আনন্দের অনুভূতি হয়।মেলার আক্ষরিক অর্থ মিলন। মেলায় একে অন্যের সঙ্গে ভাব বিনিময় হয়।
গ্রাম-বাংলার অনেকে মেলা থেকেই পুরো বছরের ঘর গেরস্থালির তৈজসপত্র কিনে থাকেন। ফলে মেলা উপলক্ষে গ্রাহকদেরও প্রস্তুতি থাকে। অভাব-অনটন যতই থাকুক, মেলার জন্য সকলেরই ছোটখাটো বাজেট থাকে। মেলার আগে বড়রা শিশুদের নগদ টাকা বকশিশ দেন। বাহারি পণ্যের পসরা বসে মেলায়।
শিশুদের আনন্দ-বিনোদনের জন্য মেলায় পাওয়া যায় মাটির পুতুল, পালকি, ঘোড়া, ষাঁড়, হরিণ, হরেক রকমের ঘুড়ি, টমটম, লাটিম, গাড়ি, বল, বেলুন, বাঁশিসহ নানান রকমের খেলনা। গাঁয়ের বধূ ও কিশোরীরা মেলা থেকে কিনে নেন আলতা, স্নো, পাউডার, কাঁচের চুড়ি, নাকের নোলক, কানের দুল, চুলের ফিতা, খোপা, ক্লিপসহ দেহাবরণের জিনিসপত্র। এ ছাড়া গেরস্থালির জিনিসপত্র যেমন দা, কাঁচি, কুড়াল, খুন্তি, রান্না-বান্নার সরঞ্জাম, পাখা, চালনি, জলচৌকি, পিঁড়ি থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের ছড়িও পাওয়া যায় মেলায়। থাকে রসনা তৃপ্তির জিনিসপত্রও।
বিশেষ করে মেলা থেকে কেনা জিলাপি, গজা, রসগোল্লা, কদমা, বাতাসা, বিন্নি ধানের খৈ ও দই-চিড়ার স্বাদই যেন আলাদা। কাপড়, মনোহারি, প্লাস্টিক পণ্য, পূজার জিনিসপত্র, ছবি, বাঁশ-বেতের সামগ্রী, তামা-কাঁসা-পিতলের বাসনপত্র প্রভৃতির দোকানও বসে মেলায়।
মেলায় দর্শকদের তাৎক্ষণিক মনোরঞ্জনের জন্যও থাকে নানান আয়োজন। নাগরদোলা, লাঠি খেলা, কুস্তিখেলা, পুতুল নাচ, যাত্রাগান, কবিগান, বাউল গান, ঘেটু গান, জারি গান, গাজীর গান, পীর-ফকিরদের গান, বায়স্কোপ, সং, সার্কাস, লটারি, কীর্ত্তন, নৌকা বাইচ, ষাঁড়ের লড়াই প্রভৃতি আয়োজন দর্শকদের বাড়তি আনন্দের খোরাক যোগায়। উপরোক্ত মেলার বিবরনের মতো বিনোদনের জন্য কোন কিছুরি কমতি ছিলো না শেখপুর বাজারের আনন্দ মেলায়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন