রহিমা বেগম নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন

রহিমা বেগম নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন
MostPlay

খুলনা নগরের মহেশ্বরপাশা হতে ‘নিখোঁজ’ হয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি করা রহিমা বেগমের বিরুদ্ধে তার ছেলে মিরাজ আল সাদী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি দাবি করেছেন, মহেশ্বরপাশার বাসা হতে আত্মগোপনে গিয়ে তার মা রহিমা বেগম নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন। আজ সোমবার তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালতে এই জবানবন্দি দেন।

এর আগে সোমবার বেলা ১২টার দিকে তিনি খুলনা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে এসে মায়ের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে পুলিশ তাকে আদালতে নিয়ে যায়। পিবিআই খুলনার পলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে এসে মিরাজ জবানবন্দি দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে আমরা তার সঙ্গে কথা বলে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার ব্যবস্থা করি। মায়ের বিচার চেয়ে মিরাজ ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

তার (মিরাজ) দাবি, রহিমা বেগম নিজেই বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে থেকে এই অপহরণ ঘটনার নাটক সাজান। এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি দাঁড়িয়েছেন। এজন্যে তিনি তার মায়ের এবং দায়ী অন্যদের বিচার দাবি করেন। মিরাজ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তার মা এখন কোথায় আছেন তিনি জানেন না। বোনদের কাছে আছে না অন্য কোথাও চলে গেছেন তাও তিনি পরিস্কার নন। আদালত রহিমা বেগমকে তার মেয়ে আদুরির হেফাজতে দিয়েছিল।

আদুরি আক্তারের কাছে তার মায়ের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি পরিস্কার কোন জবাব দেননি। পুলিশ গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে। তিনি সেখানে এক সময়ে তার বাড়ির ভাড়াটিয়া কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে ছিলেন। উদ্ধারের পর পুলিশকে রহিমা বেগম বলেছিলেন, তাকে চার-পাঁচ জনের একটি দুর্বৃত্ত দল তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

তিনি অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। তার চেতনা ফিরে এলে তিনি দেখেন তিনি বান্দরবান আছেন। সেখানকার একটি হোটেলে তিনি কাজ করতেন। পরে তার জন্ম নিবন্ধন সনদ জোগাড়ের জন্য তিনি বোয়ালমারি যান। পুলিশ তার দেওয়া তথ্যে অনেক গড়মিল পেয়েছে। উদ্ধারের একদিন আগেই ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার হওয়া একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেন মরিয়ম মান্নানসহ রহিমা বেগমের তিন মেয়ে।

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। রাত সোয়া ২টার দিকে দৌলতপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী। তাতে বলা হয়, নিখোঁজের সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেলাল হাওলাদার বাড়িতে ছিলেন।

পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা, সেখান থেকে তিনি আর বাসায় ফিরে আসেননি। মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্টে দৌলতপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরি বেগম। রহিমা বেগম অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনাটি দেশ জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password