চলচ্চিত্র জগতের পলিটিক্স আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে

চলচ্চিত্র জগতের পলিটিক্স আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে
MostPlay

চলচ্চিত্র জগতে আমি নোংরা পলিটিক্সের শিকার হয়েছি। মনোবল ছিল, পরিবার পাশে ছিল, তাই হয়তো আত্মহত্যা করিনি, লড়ে গেছি। বলতে পারেন, চলচ্চিত্র জগতের পলিটিক্স আমার ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কথাগুলো বাংলাদেশের এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খানের। আরাভ খান কাণ্ডে কয়েক মাস আগে নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি।

সেই সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানকে নিয়ে বেশ কিছু খবর। নামের মিল থাকায় অনেকে মনে করছেন, ওই আরাভ খান বাংলাদেশের চিত্রনায়ক আমিন খানের ভাই, যা নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে আমিন খানের পরিবারকে। আমিন খান বলেন, দুবাইয়ের আরাভ খান আমার ভাই নন। কী যে এক ঝামেলায় পড়েছি।

আরাভ খান নামে আমার কোনো ভাই নেই। যে আরাভ খান মনে করে অনেকেই আমার কাছে জানতে চাচ্ছেন তিনি কি আমার ভাই, সেই আরাভ খানকে আমি চিনিও না। গণমাধ্যমের খবরে জানতে পারলাম তার কথা। অনেকেই ভুল করে তাকে আমার ভাই মনে করছেন, জানতে চান- এ ঘটনায় বিব্রত বোধ করছি। আমার ভাইয়ের নাম আশরাফুল ইসলাম।

সে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছিল। সেখানে তার নাম আরাভ থাকতে পারে। এখান থেকে কেউ কেউ মনে করছেন তিনিই আমার ভাই। এ ঘটনায় সবার ভুলটা ভাঙানো দরকার। এক সময় শুটিংয়ে অ্যাকশন, কাট শুনে অভ্যস্ত চিত্রনায়ক আমিন খান এখন ব্যস্ত চাকরি জীবনে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় দায়িত্বে আছেন। এখন চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে নেই তিনি।

স্ত্রী স্নিগ্ধা খান, দুই ছেলে রাইয়ান খান আর মাঈন খানকে নিয়ে বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় থাকেন। দুই ছেলে স্কুলে পড়ে। আমিন খান বললেন, চলচ্চিত্রের জীবনটা খুব মিস করি। ওটাই আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে। নায়ক আমিন খান হয়ে বাঁচতে ইচ্ছে করে। গত শতকের নব্বই দশকে নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রম দিয়ে চলচ্চিত্রে তার শুরু। এ কার্যক্রমে নির্বাচিত হয়েও ফিল্মি পলিটিকসের কারণে দুই বছর কোনো ছবির কাজ করতে পারেননি।

১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় প্রথম সিনেমা ‘অবুঝ দুটি মন’। মোহাম্মদ হোসেন পরিচালিত এই ছবি মুক্তির আগে বাদল খন্দকারের ‘দুনিয়ার বাদশা’ ছবিতে কাজ করেন। সিনেমাটি সুপারহিট ব্যবসা করে। চাচার উৎসাহে ১৯৯০ সালে এফডিসি আয়োজিত নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমে অংশ নেন আমিন খান। সেই সময় ২০ থেকে ২২ হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে নিজেকে সেরা হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরেন। সে সময়কার কথা মনে করে আমিন খান বললেন, খুলনা থেকে ঢাকায় আসি।

কাউকে চিনি না, জানি না। একমাত্র অভিভাবক আমার চাচা। তিনিও সিনেমার কেউ নন। অডিশনে টিকে গেলাম। অডিশনের পরই বাংলাদেশের স্বনামধন্য ও প্রভাবশালী একজন পরিচালক আমাকে দিয়ে ছবি বানানোর আগ্রহ প্রকাশ করলেন। প্রতিযোগিতা শেষে ছবির নামও ঘোষণা করলেন, কিন্তু আমাকে নিলেন না। আমি চুপচাপ রইলাম।

সে সময় সবচেয়ে মেগা হিট তিনটা ছবির প্রস্তাবও আমার কাছে আসে। ‘অবুঝ দুটি মন’ করার আগে তিনটা ছবির সাইনিং মানি নিয়েছিলাম। কোনোটিতে কাজ করা হয়নি। এদিকে আমাকে প্রস্তাব দেওয়া ছবিগুলোও মুক্তি পেতে লাগল, মন খারাপ লাগা শুরু হলো। বুঝে গেছি, পলিটিক্সে পড়ে গেছি। চাচার সঙ্গে ইস্কাটনে থাকতাম। লজ্জায় বাড়িতেও যেতে পারতাম না। দুই বছরে ঈদেও খুলনায় যেতে পারিনি।

১৯৯৩ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন আমিন খান। ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন। বিয়ের পরের দুই বছরে মাত্র তিনটি ছবিতে কাজ করেন তিনি। এরপর আবার কাজে নামেন। টানা ২০১০ পর্যন্ত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৬৫টির মতো ছবিতে কাজ করেন। এরপর আগ্রহ কমতে থাকে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password