বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আবারও দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাশাপাশি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার (২৫ মার্চ) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, যে নেত্রী (খালেদা জিয়া) একজন গৃহবধূ ছিলেন।

কিন্তু জিয়াউর রহমান সর্ব প্রথম বিদ্রোহ করার পর তার স্ত্রী (খালেদা জিয়া) সেদিন যখন সোয়াত জাহাজের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখন পাকিস্তানি কমান্ডার আমাদের অষ্টম বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডার সোহরাব হোসেনসহ সৈনিকদের নিরস্ত্র করার চেষ্টা করছিল। সেই সময় খালেদা জিয়া প্রথম বলেছিলেন, ‘তোমরা অস্ত্র সমর্পণ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না জিয়াউর রহমান ফিরে আসেন।’

এ-ই দিয়ে তার শুরু। তিনি বলেন, আমি সব সময় বলার চেষ্টা করেছি যে দেশে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা কেউ যদি থাকে তিনি হচ্ছেন খালেদা জিয়া। আজ মিথ্যা মামলায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ৪০ বছর ধরে যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেন, তাকে এই সরকার আটক করে রেখেছে। চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না তারা। বাংলাদেশ চতুর্দিক থেকে জাতিগতভাবে খুব বিপজ্জনক অবস্থায় আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে লক্ষ্য ছিল একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা, সেটাই আজ সবচেয়ে বিপদের সম্মুখীন হয়েছে।

দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সারা বিশ্বে আমরা চিহ্নিত হয়েছি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী একটা দেশ হিসেবে। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘শিশু মুক্তিযোদ্ধা’ বলে দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দলের নেতা তারেক রহমান সাহেবও ওই সময়ে (একাত্তরে) তার ছোট ভাইসহ খালেদা জিয়ার সঙ্গে বন্দি ছিলেন।

সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের ওই ছোট মানুষটির অবদানও কারও অস্বীকার করার উপায় নেই। এই নেতাকে আজ দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধ নয়, এক ব্যক্তির জন্মশতবার্ষিকীকে সরকার প্রাধান্য দিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার কতগুলো প্রোগ্রামে স্বাধীনতা যুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধকে সামনে নিয়ে এসেছে?

মুক্তিযুদ্ধে যারা সেদিন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রবাসী সরকার, এমএজি ওসমানির নাম কয়বার উচ্চারণ করা হয়েছে? সেক্টর কমান্ডারদের নাম কয়বার করা হয়েছে, তাজউদ্দিন আহমেদের নাম কয়বার উচ্চারণ করা হয়েছে? আপনারা নিজেরাই তো বুঝবেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ কোথায় গেল? এখানে তো একজন ব্যক্তির ব্যাপারটা এসে যাচ্ছে সামনে।