দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াতে যদি পয়সা না লাগতো তবে কেউই হয়ত ঘরে বসে ছুটি পার করতো না। অথচ বেড়াতে যেতে খরচ হয় ভালোই। আর বুদ্ধি করে না চললে একবার বেড়ানোর খরচ সামলাতে গিয়ে একাধিকবার বেড়ানো পরিকল্পনা বাতিল করতে হতে পারে। অর্থাৎ বেশি বেশি বেড়াতে হলে উপায় হল খরচ কমানো। আর খরচ কমানো জন্য চাই সুষ্ঠু পরিকল্পনা, খরচের বাজেট। ‘রিয়েলসিম্পল’ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল কম খরচে ভ্রমণের উপায়।
পর্যটকের ভীড় কম এমন সময় বেছে নেওয়া: ইংরেজি নববর্ষের আগের সময়ে দেশে বিদেশের প্রায় সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের উপচে পড়া ভীড় থাকে। দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঈদ, শীতকাল, লম্বা ছুটির সময়গুলোতে থাকে লোকে লোকারন্য অবস্থায়। আর এই সময়টায় মানুষ যেমন বেড়াতে যাওয়া পরিকল্পনা সাজায় তেমনি পর্যটন ব্যবসায়ীরাও রমরমা ব্যবসা করে। তাই সবকিছুরই খরচ এসময় বেশি। কম খরচে বেড়াতে যেতে হলে যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানে কোন সময় পর্যটকের ভীড় সবচাইতে কম থাকে সেটা জানতে হবে। এসময় যাতায়াত ব্যবস্থা, আবাসন, দর্শনীয় স্থান দর্শন সবকিছুতেই ছাড় পাবেন। এই সময়টাকে নিজের সুবিধার্থে ব্যবহার করতে পারলেই আপনি হবেন বুদ্ধিমান ভ্রমণকারী। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে, যেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন সেই স্থান ‘অফ-সিজন’য়ে নিরাপদ কি-না। বিশেষ করে যারা পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাবেন, তাদের এই বিষয়টা ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হবে। খরচ বাঁচাতে গিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।
ট্রাভেল ওয়েবসাইট ঘেটে কম খরচে হোটেল নেওয়া: সরাসরি হোটেল কিংবা রিসোর্টের নম্বরে ফোন করলে আবাসন খবরটা বেশি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বরাবরই বেশি। এর বদলে ‘ট্রাভেল গাইড ওয়েবসাইট’গুলো ঘেটে হোটেল বুকিং দিতে হবে। ‘বুকিং ডটকম’, ‘মেকমাইট্রিপ ডটকম’, ‘প্রাইসলাইন ডটকম’ ইত্যাদি এমন কিছু সুপরিচিত ওয়েবসাইট। হোটেল বুকিং দেওয়ার এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সদস্য হলে আরও অনেক সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। বিশেষত, দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে এই ওয়েবসাইটগুলো খরচের চাপ অনেকটা কমাবে।
সুযোগ থাকলে পরিচিত কারও বাড়িতে থাকা: যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানে যদি পরিচিত কেউ থাকে এবং তার বাড়িতে থাকার যদি সম্ভব হয় তবে এর চাইতে কম খরচে আবাসনের ব্যবস্থা কেউই দিতে পারবে না। আর পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে সময়টাও ভালো কাটবে, বেড়ানোর দল ভারী হবে। তবে মনে রাখতে হবে, হুট করে কারও বাড়িতে গিয়ে হাজির হওয়াটা অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। তাই আগেই তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে।
যানবাহনের টিকিট কাটার সঠিক সময়: ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইটগুলো বিমানের টিকিট কাটার ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা দেয়। তবে বিমানের টিকিট কেনার সঠিক সময়টা জানা থাকলে এর চাইতেও অনেক বেশি খরচ কমানো সম্ভব। ‘চিপএয়ার ডটকম’য়ের করা ২০১৯ সালের এক জরীপে দেখা যায়, ভ্রমণের দিনের চার মাস থেকে তিন সপ্তাহ আগে টিকিট কেনা হলে খরচ সবচাইতে কম হয়। আরও জানা যায়, মঙ্গলবার বিমানের টিকিটের দাম গড় হিসেবে সবচাইতে কম থাকে। এরপর আসে রবিবার ও বুধবার। আর কবে টিকিট বুকিং দেওয়া হচ্ছে তা খরচের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না, কোন দিনে ভ্রমণ করছেন সেটাই মুখ্য।
রান্নাঘর আছে এমন ঘরে থাকা: সুযোগ যদি থাকে তবে খরচ একটু বেশি হলেও রান্নার ব্যবস্থা আছে এমন হোটেল ভাড়া নিতে পারেন। এতে বাইরে খাওয়ার খরচ কমিয়ে আনতে পারবেন অনেকটা। আর তা দিয়ে হোটেলের বাড়তি খরচটাও পুষিয়ে নিতে পারবেন।
বিনা পয়সায় বেড়ানো যায় এমন দর্শনীয় স্থানে যাওয়া: কিছু স্থানে যেতে টিকিট কেটে ঢুকতে হয়, আবার কিছু জায়গায় প্রবেশ মূল্য দিতে হয় না। কিছু রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা বিনা পয়সায় নেওয়া যায়, আবার কিছুর জন্য পয়সা গুনতে হবে। বেড়াতে গিয়ে বিনা পয়সার রোমাঞ্চের দিকে জোর বেশি দিন, খরচ কমবে। প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করতে হয় এমন কোনো স্থানে কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান থাকার সুবাদে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা থাকতে পারে। সেই বিষয়গুলোও ঘেটে দেখা উচিত।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন